পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vafòs ᎨᎸ চারটায় পরে বাড়ি ফিরিত। কোনোদিন বা সারনাথের পথে কোথাও চড়াইভাতি করিতে গেল। মাসের মধ্যে পনেরোদিন এই রকম চলিত । গণেশ-মহল্লাতে প্রেমচাঁদ মুখুয্যে নামে নদীয়া জেলার একজন বৃদ্ধ ব্ৰাহ্মণ কাশীবাস করিতেন। তঁার এক পিতৃমাতৃহীন ভাই-পো তার কাছে থাকিয়া নামে বিদ্যাভ্যাস করিত। কাজে সে ছিল উপরোক্ত ডানপিটে স্কুল-পালানো ছেলের দলের একজন টাই সদস্য। ভ্রাতুষ্পপুত্রটির নাম সতীশ, রং টকটকে গৌরবর্ণ, একহার চেহারা, নতুন স্প্রিং-এর মত তার সমস্ত দেহের একটা দৃঢ়তা, বঁধুনী ও স্থিতিস্থাপকতা ছিল। নতুন নতুন বদমায়সি ফন্দী আঁটিবার বুদ্ধিতে ও সাহসে দলের সকলেই তার কাছে হার মানিত । ফলে এই দলটির লেখাপড়া যাহা হইবার হইল, তারপর যখন সখের থিয়েটারের ধূম কলিকাতা হইতে কাশী গিয়া পৌঁছিল, এদের দল কাশীতে নব আন্দোলনের প্রতিভূ ও প্ৰাণ-স্বরূপ হইয়া মহা উৎসাহে নিজেরাই বড় বড় কাগজে সিন আঁকিয়া বেলের আঠা দিয়া জুড়িতে লাগিল। নিজেরাই ষ্টেজ বঁধিল এবং ঘণ্টামার্ক সবেদার সাহায্যে রাজা, উজির সাজিয়া নাটকাভিনয় সুরু করিল। বছর পাচেক পরে প্রেমচাঁদ মুখুয্যের লীলা-প্ৰাপ্তি ঘটিল, গণেশ মহল্লার রামজীবনবাবুও গবর্ণমেণ্ট পেনসনের মায়া কাটাইলেন। তঁর ছেলেরা পৈতৃক অর্থ ভাগ-বাটোয়ারা করিয়া লইয়া ভায়ে ভায়ে পৃথক হইল। সতীশ নিরাশ্রয় ও কপর্দকশূন্য অবস্থায় এখানে-ওখানে ঘুরিতে ঘুরিতে জুটিল গিয়া নেপালে। নেপালে যে কি করিয়া সে দরবার হাসপাতালে কম্পাউণ্ডারী পাইয়া চাকুরিতে ও চিকিৎসা ব্যবসায়ে দু’পয়সা রোজগার করিতে লাগিলঃ-যে সতীশ ইংরাজি । স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর গণ্ডি দু'তিন বৎসরেও ডিঙাইতে পারে নাই, সে কি করিয়া দুরূহ। ইংরাজীতে লেখা ডাক্তারী বই আয়ত্ত করিয়াছিল, সামান্য বেতনের কম্পাউ