পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

t”ቱ” *stra গুর হইয়া সে কি ভাবে অবসর সময়ে রোগী দেখিয়া চিকিৎসা ব্যবসায়ে রেশ নাম করিয়া ফেলিয়াছিল-সে সব খবর দিতে পারিব না। কিন্তু প্ৰাকৃটিসে সে বাস্তবিকই সুনাম অর্জন করিল, বিশেষ করিয়া অস্ত্ৰ চিকিৎসায়। ভালো ও নিপুণ অস্ত্ৰ-চিকিৎসকের যে যে গুণ থাকা দরকার-সাফ হাত, সাফ চোখ, সাহস, সতর্কতা, প্রকৃতিস্থতা, অবিচলিত বিচার-বুদ্ধি-এ সবগুণ তার ধীরে ধীরে বাড়িতে লাগিল-সঙ্গে সঙ্গে পসারিও । সতীশ নেপালে আসিয়া স্থানীয় স্কুলের জনৈক শিক্ষকের কন্যাকে বিবাহ করিয়াছিল। শিক্ষকের নাম মৃত্যুঞ্জয়বাবু, বাড়ী নদীয়া জেলার মেহেরপুরে। পাচ বৎসর অন্তর বৃদ্ধ পিতাকে দেখিতে একবার করিয়া দেশে যাইতেন। বিবাহেব দুই বৎসর পরে বাংলা ১৩০৭ সালে তঁহাদেরই সঙ্গে সতীশ বাংলাদেশে অনেককাল পরে ফিরিয়া আসিল ও সর্বপ্রথম কলিকাতা সহর দেখিল । পৈতৃক বাসস্থান যে গ্রামে ছিল, সেখানেও একবার গেল। বাংলাদেশে আসিয়া সতীশের মনে হইল। যে, মায়ের মুখ সে ভাল মনে করিতে পারে না, ধোঁয়া ধোঁয়া অস্পষ্ট সামান্য একটু মনে পড়ে, যেন মেঘলা দিনের দিবানিদ্রার স্বপ্ন-সে। মায়ের স্নেহ সারা দেশটাতে ছড়াইয়া পড়িয়া যেন সাগ্রহে তাহার প্রত্যাবৰ্ত্তনের প্রতীক্ষায় পথ চাহিয়া বসিয আছে । গ্রামে আসিলে গ্রামের তো কেহ তাহাকে চিনিতেই পারে না, কারণ সে গিয়াছিল। নিতান্ত ছেলেবেলাতে দশ-বারো বছর বয়সে। পৈতৃক ভিটা খুজিয়া বাহির করিতে বেগ পাইতে হইল, কারণ এমন দুৰ্ভেদ্য ৱিন-জঙ্গলে ঢাকিয়া পড়িয়াছে যে বাহির হইতে চিনিয়া লওয়াই কষ্টকর। গ্রামের সকলেই আসিয়া ধরিয়া বসিল যে, তাহাকে দেশে ঘরবাড়ী করিতে হইবে-এখানে বাস করিতে হইবে। ইহার মধ্যে প্রতিবেশীর পুত্রের উপর নিছক নিঃস্বাৰ্থ ভালবাসা ছিল না, তাহা বলাই বাহুল্য। দেশে মোট ডাক্তার নাই, সতীশের মত একজন নামজাদা ডাক্তার গ্রামে বসিয়া প্ৰাকৃটিম করিলে গ্রামের