পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s যুগান্ডক্স “ছোট পিসি কঁাদ কেন, নাম না” বলিয়া বিজয়াকে নামিবার জন্য বার বার অনুরোধ করিতে লাগিল। হায় ! বিজয়া আজ গাড়ী হইতে নামিতে পারিতেছেন না। যে পিত্ৰালয় চিরদিন তাহার পরম আরামের স্থান, পিতৃসম জ্যেষ্ঠ সহোদরের ও মাতৃসম ভ্ৰাতৃজায়ার আকৃত্রিম স্নেহ ও পরিবারস্থ সকলের আদর যত্ন পাইবার স্থান, যেখানে রোগে শোকে ভয়ে বিপদে মস্তক রাখিয়া তিনি কত বার নিরাপদ হইয়াছেন, যেখানকার প্রত্যেক পদার্থ তাহার শৈশবের ক্রীড়া এবং যৌবনের আশা ও আকাঙ্ক্ষার সহিত সম্বন্ধ, যেখানে ভালবাসিবার কত বস্তু বিদ্যমান, বিবাহিত হইয়া পরগৃহবাসিনী হইলেও যেখানে আসিবার জন্য র্তাহার হৃদয় কত না, উৎসুক হইত ও আনন্দে নৃত্য করিত, আজ অলঙ্কারবিহীনহস্তে ও বিধবার বেশে সেই ভবনে তিনি সহসা প্ৰবেশ করিতে পারিতেছেন না । গাড়ীর এক কোণে মুখ লুকাইয়া চক্ষের জল মুছিতেছেন। অবশেষে ভবেশের ব্যগ্রতায় গাড়ী হইতে অবতরণ করিলেন। ইতিমধ্যে কৰ্ত্তা মহাশয়ও দ্বারে আসিয়া উপস্থিত। অন্য সময়ে বিজয়ী পিতৃসম জ্যেষ্ঠের চরণে ভূমিষ্ঠ হইয়া প্ৰণত হইতেন ; আজ র্তাহাকে দেখিয়াই দুর্ণিবার শোকসাগর উথলিয়া উঠিল; আর এক পদও অগ্রসর হইতে পারিলেন না। পুনরায় বাহিরের দ্বারের কপাটের কোণে মুখ লুকাইয়া অশ্রু মোচন করিতে লাগিলেন। কেবল ইশারায় সন্তান দুটীকে জ্যেষ্ঠের চরণে প্ৰণাম করিতে আদেশ করিলেন। তাহারা মাতুলের চরণে প্ৰণত হইল। অন্য সময় হইলে তর্কভূষণ মহাশয় তাহাদিগকে দুই একটী আশীৰ্ব্বাদসূচক কথা বলিতেন ; কিন্তু আজ তাহারও মুখে বাক্য সরিল না, বিজয়াকেও কিছু বলিতে পারিলেন না। তাহার স্বাভাবিক ধৈৰ্য্য ও মানসিক বলের দ্বারা শোকাবেগ সংবরণ করিয়া, রাখিলেন ; বিশাল চক্ষুদ্বয় আরক্তবর্ণ ও অশ্রুতে পূর্ণ হইয়া আদিক্ষ; কিন্তু