পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবীনচন্দ্র যে এত প্রকার কাৰ্য্যের আয়োজন করিয়াছেন ও সর্বদাই । আপনাকে ব্যস্ত রাখিবার প্রয়াস পাইতেছেন, তথাপি মনের কৃষ্ণকামিনীমুখীন গতি ফিবাইতে পারিতেছেন না। নিৰ্জন হইলেই সেই চিন্তা হৃদয়কে অধিকার করে। মনটা সৰ্ব্বদা কৃষ্ণকামিনীর সংবাদ পাইবার | জন্য হা হা করে ; ব্ৰঙ্গরাজ ও মথুরেশের পত্রে তঁাচার সংবাদ যে একটু - আধটু পান, তাহা অমূল্য সম্পত্তির ন্যায় তুলিয়। রাখেন, বার বার পাঠ করেন। এক একবার ব্রজরাজের নিকট নিজ হৃদয়ের ভােব ব্যক্তি করিয়া । কৃষ্ণকামিনীর সহিত চিঠিপত্রে আলাপ আরম্ভ করিবার জন্য মনে আবেগ । উপস্থিত হয়, কিন্তু আবার তাহার শান্তির প্রতি লক্ষ্য করিয়া সে আবেগ । দমন করিয়া রাখেন ; এবং সৰ্ব্বদা কোন না কোনও ভাল বিষয় পাঠ ও · চিন্তাতে আপনাকে নিযুক্ত করিবার চেষ্টা করেন। . তিনি কলিকাতাতে থাকিতে একটী বিষয়ে মনোযোগ দিতে আরম্ভ। করিয়াছিলেন। এখানে আসিয়া সে বিষয়টা মনোযোগ পূৰ্ব্বক পাঠ করিতেছেন। তাহা উদ্ভিদ-বিদ্যা। এখানে গাছ-পালার অভাব নাই, সুতরাং উদ্ভিদ-বিদ্যা সম্বন্ধীয় গ্ৰন্থাবলী পাঠের বিশেষ সহায়তা হইতেছে। এটা ভঁাচার একটা প্ৰধান বিনোদনের উপায়। স্কুলের বালকগণ কোনও : প্রকার নূতন বা বিচিত্র বৃক্ষলতা ফুল পাতা পাইলেই স্কুলে আসিবার সময় অ্যানিয়া উপস্থিত করে, তিনি সেগুলি লইয়া পরীক্ষা ও পাঠ করেন। কিন্তু এই সকল পাঠ ও চিন্তার ভিতরে ও কৃষ্ণ কামিনীর চিন্তা আসিয়া। হৃদয়ে প্ৰর্দিষ্ট হয়। মধ্যে মধ্যে কৃষ্ণকামিনী যেন আসিয়া বলেন,- “রাপ রােখ তোমার পড়া রাখ, এখন আমার সঙ্গে কিয়িং কাণ থাক।” নবীন যেন বলেন,-“আমি যে তোমাকে দূরে রাখিতে চাহিতেছি, কেন তুমি আমার হৃদয়ে আসিয়া প্রবেশ কর ?” এইরূপে নবীনচন্দ্ৰ কঠোর তপস্যার দ্বারা আত্ম-শাসন করিবার প্রয়াস পাইতেছেন।