পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ \SOS পাঁচজনে একত্র হইলেই বাঙ্গালী ভাষার প্রতি বিদ্রুপ, ব্ৰাহ্মণপণ্ডিতের প্ৰতি উপহাস ও প্ৰচলিত রীতিনীতির প্রতি কটক্তি' বর্ষণ করিয়া থাকেন ; এবং সর্বশেষে ইংরাজী সুরা সেবনের দ্বারা, ও অখাদ্য ভোজনের দ্বারা, সংস্কার কাৰ্য্যের পরাকাষ্ঠ প্ৰদৰ্শন পূর্বক স্ব স্ব গৃহে প্ৰতিনিবৃত্ত হন। অবশ্য এত কথা বাহিরের লোকের বিদিত নহে ; একটা জনরব আছে এইমাত্র। সেকেলে লোকেরা এই যুবকদলকে মনে মনে ঘূণা করেন ও দূরে পরিহার করিবার চেষ্টা করেন। বিজয়াকে কলিকাতাতে থাকিতে হইলে, এই দেবরেরই আশ্রয়ে থাকিতে হয় ; তাহাতে তর্কভূষণ মহাশয়ের বিশেষ আপত্তি। কিন্তু যে দিন নন্দকিশোর বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃত্যুশয্যাতে সহোদরদ্ধয়কে ডাকিয়া তাঁহাদের হস্তে স্বীয় পত্নী ও পুত্রকন্যার ভার অৰ্পণ করিয়া যান, সে দিনের, সে ঘটনার কথা বিজয়ার স্মৃতিতে জাগ্রত রহিয়াছে। দেবরাদ্বয়ের নিকট হইতে দূরে থাকিবার প্ৰস্তাব যখনই তাহার সমক্ষে উপস্থিত হয়, তখনই যেন তাহার মনে বলে, তাহা হইলে তিনি অপরাধিনী হইবেন । সুতরাং তিনি স্বীয় পতির মৃত্যুশয্যার কথা স্মরণ করাইয়া দিয়া পুত্রকন্যার রক্ষা ও শিক্ষার ভার গ্ৰহণ করিবার জন্য দেবরদ্বয়কে বার বার অনুরোধ করিতে লাগিলেন । যুগলকিশোরের কথার ভাবে বোধ হইল, তিনি একাকী সে ভার বহনে অসমর্থ ও অনিচ্ছুক। হরিকিশোর অধিকাংশ সাহায্য করিলে তিনি তাহাদিগকে স্বীয় তত্ত্বাবধানে রাখিয়া শিক্ষাদান করিতে পারেন। এই কথোপকথনের পর বিজয়া সমুদায় বিবরণ আনুপূর্বিক লিখিয়া মধ্যম দেবরকে মেদিনীপুরে পত্ৰ লিখিলেন। দিনের পর দিন যাইতে লাগিল, পত্রের কোনও উত্তর নাই। কয়েকদিন পরে বিজয়া দ্বিতীয় পত্র লিখিলেন, তাহারও উত্তর নাই। শেষে যুগলকিশোর মধ্যমের অভিপ্ৰায় জানিবার জন্য নিজে এক পত্র লিখিলেন। সংক্ষেপে উত্তর আসিল;- “আমার