পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 R যুগান্তর করিলেন—“হঁ। হে কপিগণ ! তোমাদের মধ্যে ত সকল কাজের উপযুক্ত বানর আছে ; গাছ, পাথর বহিবার বানর, সেতু বাধিবার জন্য ইঞ্জিনীয়ার বানর, ইত্যাদি সকল শ্রেণীর বানর দেখি ; বৈদ্য বানর কি কেহ নাই ?” যখন কথাটা এইস্থলে পৌঁছিয়াছে, তখন কলুটোলার বৈদ্যজাতীয় সেনবংশজ একজন বড়লোক আসরে প্রবেশ করিতেছেন। ঐ বড়লোকটার সহিত শিরোমণি মহাশয়ের আত্মীয়তা ছিল ; তাহার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া কথক বলিয়া উঠিলেন ;- “এই যে বৈদ্য বানর উপস্থিত !” অমনি সভামধ্যে একটা হাস্তের রোল পড়িয়া গেল। আজ কিন্তু তিনি রসিকতা করিতেছেন না। আজ আর এক রসের অবতারণা করিয়াছেন। তর্কভূষণ মহাশয়ের বিশেষ আদেশক্ৰমে তিনি দক্ষ-যজ্ঞ, সতীর প্রাণত্যাগ, হিমালয়ে সতীর জন্ম, সতীর তপস্যা ও হরের সহিত পুনৰ্ম্মিলন, এই পৌরাণিক আখ্যায়িকা অবলম্বন করিয়া কথা কহিতেছেন। অদ্য হরকে পাইবার জন্য সতীর তপস্যা বিষয়ে কথা হইতেছে। শিরোমণি মহাশয়ের প্রতিভাগুণে এমনি ভাবের আবির্ভাব হইয়াছে যে, সকলেই স্পন্দ-হীন। বিশেষতঃ গিরিরাজ-পত্নী মেনকা ও উমার কথোপকথনের স্থলটা এমন সুন্দর হইয়াছে যে, সে সময়ে কেহই চক্ষুদ্ধয়কে শুষ্ক রাখিতে পারেন নাই। তর্কভূষণ মহাশয়ের মুখের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া দেখা গেল, যে, ভাবাবেশে তঁহার মুখমণ্ডল দীপ্তিশালী হইয়া উঠিয়াছে, এবং দুই চক্ষে অজ্ঞাতসারে জলধারা বহিতেছে। কালীর দালানে চিকের অন্তরালে মহিলাগণ বসিয়াছেন। সেখানে বিজয়ার চক্ষে জলধারা বহিতেছে। শিরোমণি মহাশয় মূল বিষয় অবলম্বন করিয়া পাতিব্ৰত্যাধৰ্ম্মের মহিমা, দেবদ্বিজে ভক্তি, বৈরাগ্য, তপস্যা, ইন্দ্ৰিয়-নিগ্রহের আবশ্যকতা, প্ৰভৃতি অনেক বিষয়ের অবতারণা করিয়াছেন; এবং প্রত্যেকটাই পৌরাণিক আখ্যায়িকার সাহায্যে এরূপ উজ্জল