পাতা:যোগতত্ত্ব-বারিধি - সুরেন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য্য.pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৪ যোগত ত্ব-বারিধি । হইবার একমাত্র সম্ভাবনা । দেবতা প্রভৃতিকেও মুক্ত হইতে হইলে মানবজন্ম গ্রহণ করিতে হইবে । এই মানযজন্মেই মুক্তির সর্বাপেক্ষা অধিক সুবিধা । এক্ষপে এই মতের বিরোধী মতের আলোচনা করা যাউক । বৌদ্ধগণ এই অগত্তার অস্তিত্ব একেবারে অস্বীকার করেন । বৌদ্ধগণ বলেন, —এই শরীর-মনের পশ্চাতে আত্মা বলিয়া একটি পদার্থ আছে, মানিবার অবশ্যকতা কি ? এই শরীর ও মনোরূপ যন্ত্র কি স্বতঃসিদ্ধ বলিলেই যথেষ্ট ব্যাখ্যা হইল না ? আবার অার একটি তৃতীয় পদার্থ কল্পনার প্রয়োজন কি ? এই যুক্তিগুলি খুব প্রবল । যতদূর পর্য্যস্ত অনুসন্ধান চলে, ততদূর বোধ হয়, এই শরীর ও মনোযন্ত্র স্বতঃসিদ্ধ — অন্ততঃ আমরা অনেকে এই তত্ত্বটি এই ভাবেই দেখিয়া থাকি । তবে শরীর ও মনোহ তিরিক্ত, অথচ শরীর-মনের আশ্রয়-ভূমি স্বরূপ আত্মা নামক একটি পদার্থের অস্তিত্ব কল্পনায় আবশ্বক কি ? শুধু শরীরমন বলিলেই ত যথেষ্ট হয় । নিয়ত পরিণামশীল জড়শ্রোতের নাম শরীর,—অণর নিয়ত পরিণামশীল চিস্তাস্রোতের নাম মন । তবে এই যে, একত্বের প্রতীতি হইতেছে, তাহা কিসে হয় ? বৌদ্ধ বলেন,—এই এক ত্ব বাস্তবিক নাই। একটি জলন্ত মশাল লইয়া ঘুরাইতে থাক –বুরাইলে একটি অগ্নির বৃত্তস্বরূপ হইবে । বাস্তবিক কোন বৃত্ত হয় নাই, কিন্তু মশালের নিয়ত ঘূর্ণনে উহা ঐ বুত্তের অপকার ধারণ করিয়াছে। এইরূপ আমাদের জীবনেও একত্ব নাই। জডের রাশি ক্রমাগত চলিয়াছে, সমুদয় জড়রাশিকে এক বলিতে ইচ্ছা কর, বল, কিন্তু তদতিরিক্ত বাস্তবিক কোন একত্ব मांहे ॥ মনের সম্বন্ধে ও তদ্রুপ , প্রত্যেক চিন্তা অপর চিন্ত হইতে পৃথক । এই প্রবল চিন্তাম্রোতেই এই ভ্ৰমাত্মক একত্বের ভাব রাখিয়া যাইতেছে ;