পাতা:যোগতত্ত্ব-বারিধি - সুরেন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য্য.pdf/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৬ যোগতত্ত্ব-বারিধি । করিলে আমরা পরিণামই কল্পনা করিতে পারি না । কোন অপেক্ষণকৃত অল্প পরিণামী পদার্থের তুলনায় কোন পদার্থকে পরিণামিরূপে চিস্তা করা যাইতে পারে, আবার তাহ অপেক্ষাও অল্পপরিণামী পদার্থের সহিত তুলনায় উহাকেও আবার পরিণমিরূপে নির্দেশ করা যাইতে পারে,—যতক্ষণ না একটি সম্পূর্ণ অপরিণামী পদার্থ বাধ্য হইয় স্বীকার করিতে হয় । এই জগৎপ্ৰপঞ্চ অবশ্য এমন এক অবস্থায় ছিল, যখন উহা স্থির-শাস্ত ছিল,—যখন উহা শক্তিদ্বয়ের সামঞ্জস্য স্বরূপ ছিল, অর্থাৎ কোন শক্তিরই অস্তিত্ব ছিল না । কারণ, বৈষম্য না হইলে শক্তির বিকাশ হয় না । এই ব্ৰহ্মাও আবার সেই সাম্যাবস্থা প্রাপ্তির জন্ত চলিয়াছে । যদি আমাদের কোন বিষয়-সম্বন্ধে নিশ্চিত জ্ঞান থাকে, তা হা এই । দ্বৈতবাদীরা যখন বলেন, কোন অপরিণামী পদার্থ আছে, তখন তাহার। ঠিকই বলেন । কিন্তু উহা যে শরীর-মনের সম্পূর্ণ অতীত, শরীর-মন হইতে সম্পূর্ণ পৃথক,—এ কথা ভুল । বৌদ্ধের যে বলেন, সমুদয় জগৎ কেবল পরিণাম-প্রবাহমাত্র, এ কথাও সত্য ; কারণ, যতদিন আমি জগৎ হইতে পৃথক, যতদিন আমি আমার অতিরিক্ত আর কিছুকে দেখি,—মোট কথা, যতদিন দ্বৈতভাব থাকে, ততদিন এই জগৎ পরিণামশীল বলিয়াই প্রতীত হইবে । কিন্তু প্রকৃত কথা, এই জগৎ পরিণামী ও বটে, অপরিণামীও বটে। আত্মা, মন ও শরীর তিনটি পৃথক বস্তু নহে, উহার একই। একই বস্তু কখন দেহ, কখন মন, কখন বা দেহ-মনের অতীত আত্মা বলিয়া প্রতীত হয় । যিনি শরীরের দিকে দেখেন, তিনি মন পৰ্য্যস্ত দেখিতে পান না ; যিনি মন দেখেন, তিনি আত্মা দেখিতে পান না ; আর যিনি আত্মা দেখেন, র্ত হার পক্ষে শরীর-মন উভয়ই কোথাম চলিয়া যায় ! যিনি কেবল গতি দেখেন, তিনি সম্পূর্ণ স্থিরভাৰ দেখিতে