পাতা:যোগাযোগ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যোগাযোগ

বোঝাপড়া করতে এখনও বাকি আছে। এখনও মনের মধ্যে কোনো জবাব পাচ্ছে না।

 মোতির মা আপন ঘরে গিয়ে নবীনকে ডেকে বললে, “শোনো একটি কথা। বড়ঠাকুরের বাইরের ঘরে তাঁর ডেস্কের উপর খোঁজ করে এস গে, দিদির কোনো চিঠি এসেছে কি না— দেরাজ খুলেও দেখো।”

 নবীন বললে, “সর্বনাশ!”

 “তুমি যদি না যাও তো আমি যাব।”

 “এ যে ঝোপের ভিতর থেকে ভালুকের ছানা ধরতে পাঠানো।”

 “কর্তা গেছেন আপিসে, তাঁর কাজ সেরে আসতে বেলা একটা হবে— এর মধ্যে—”

 “দেখো মেজোবউ, দিনের বেলায় একাজ কিছুতেই আমার দ্বারা হবে না, এখন চারিদিকে লোকজন। আজ রাত্রে তোমাকে খবর দিতে পারব।”

 মোতির মা বললে, “আচ্ছা, তাই সই। কিন্তু নুরনগরে এখনই তার করে জানতে হবে বিপ্রদাসবাবু কেমন আছেন।”

 “বেশ কথা, তা দাদাকে জানিয়ে করতে হবে তো?”

 “না।”

 “মেজোবউ, তুমি যে দেখি মরিয়া হয়ে উঠেছ? এ-বাড়িতে টিকটিকি মাছি ধরতে পারে না কর্তার হুকুম ছাড়া, আর আমি—”

 “দিদির নামে তার যাবে তোমার তাতে কী?”

 “আমার হাত দিয়ে তো যাবে।”

 “বড়ঠাকুরের আপিসে ঢের তার তো রোজ দরোয়ানকে দিয়ে পাঠানো হয়, তার সঙ্গে এটা চালান দিয়ো। এই নাও টাকা, দিদি দিয়েছেন।”

১০৭