“হঠাৎ তােমার এত সাহস বেড়ে উঠল কোথা থেকে?”
“বড়োবউরানী আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন তাঁর দাদার চিঠি এসেছে কি না। এ-বাড়ির চিঠি তাে তােমার কাছে এসে প্রথমটা ওই ডেস্কেই জমা হয়, তাই আমি দেখতে এসেছিলুম।”
“আমাকে জিজ্ঞাসা করতে সবুর সয় নি?”
“তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তাই—”
“তাই আমার হুকুম উড়িয়ে দিতে হবে?”
“তিনি তাে এ-বাড়ির কর্ত্রী, কেমন করে জানব তাঁর হুকুম এখানে চলবে না? তিনি যা বলবেন আমি তা মানব না এতবড়াে আস্পর্ধা আমার নেই। এই আমি তােমার কাছে বলছি, তিনি তাে শুধু আমার মনিব নন তিনি আমার গুরুজন, তাঁকে যে মানব সে নিমক খেয়ে নয়, সে আমার ভক্তি থেকে।”
“নবীন, তােমাকে তো এতটুকু বেলা থেকে দেখছি, এ-সব বুদ্ধি তােমার নয়। জানি তােমার বুদ্ধি কে যােগায়। যাই হােক, আজ আর সময় নেই, কাল সকালের ট্রেনে তােমাদের দেশে যেতে হবে।”
“যে আজ্ঞে” বলেই নবীন দ্বিরুক্তি না করেই দ্রুত চলে গেল।
এত সংক্ষেপে “যে আজ্ঞে” মধুসূদনের একটুও ভালো লাগল না। নবীনের কান্নাকাটি করা উচিত ছিল, যদিও তাতে মধুসূদনের সংকল্পের ব্যত্যয় হত না। নবীনকে আবার ফিরে ডেকে বললে, “মাইনে চুকিয়ে নিয়ে যাও, কিন্তু এখন থেকে তােমাদের খরচপত্র যােগাতে পারব না।”
নবীন বললে, “তা জানি, দেশে আমার অংশে যে জমি আছে তাই আমি চাষ করে খাব।”
বলেই অন্য কোনাে কথার অপেক্ষা না করেই সে চলে গেল।