পাতা:যোগাযোগ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যোগাযোগ

 “না, ভয় নেই, তুমি চলে গেলে তখন খুলব।”

 “আচ্ছা জেঠাইমা, তুমি জটাইবুড়িকে দেখেছ?”

 “কী জানি, হয়তাে দেখে থাকব, কিন্তু চিনতে সময় লাগে।”

 “একতলায় উঠোনের পাশে কয়লার ঘরে সন্ধ্যের সময় চামচিকের পিঠে চড়ে সে আসে।”

 “চামচিকের পিঠে চড়ে সে আসে?”

 “ইচ্ছে করলেই সে খুব ছােট্ট হতে পারে, চোখে প্রায় দেখাই যায় না।”

 “সেই মন্তরটা তার কাছে শিখে নিতে হবে তো।”

 “কেন, জ্যেঠাইমা?”

 “আমি যদি পালাবার জন্যে কয়লার ঘরে ঢুকি তবুও যে আমাকে দেখতে পাওয়া যায়।”

 হাবলু এ- কথাটার কোনাে মানে বুঝতে পারলে না। বললে, “কয়লার মধ্যে সিঁদুরের কৌটো লুকিয়ে রেখেছে। সেই সিঁদুর কোথা থেকে এনেছে জান?”

 “বােধ হয় জানি।”

 “আচ্ছা, বলো দেখি।”

 “ভােরবেলাকার মেঘের ভিতর থেকে।”

 হাবুল থমকে গেল। তাকে ভাবিয়ে দিলে। বিশেষ-সংবাদদাতা তাকে সাগর পারের দৈত্যপুবীর কথা বলেছিল। কিন্তু জেঠাইমার কথাটা মনে হল বিশ্বাসযােগ্য, তাই কোনো বিরুদ্ধ তর্ক না তুলে বললে, “যে-মেয়ে সেই কৌটো খুঁজে বের করে সিঁদুরটিপ কপালে পরবে, সে হবে রাজরানী।”

 “সর্বনাশ! কোনাে হতভাগিনী খবর পেয়েছে নাকি?”

১৬২