“সেজোপিসিমার মেয়ে খুদি জানে। ঝুড়ি নিয়ে ছন্নু যখন সকালে কয়লা বের করতে যায় রোজ খুদি সেইসঙ্গে যায়—ও একটুও ভয় করে না।”
“ও-যে ছেলেমানুষ, তাই রাজরানী হতেও ভয় নেই।”
বাইরে ঠাণ্ডা উত্তরে হাওয়া দিচ্ছিল তাই মোতিকে নিয়ে কুমু ঘরে গেল; সেখানে সোফায় বসে ওকে কোলে তুলে নিলে। পাশের তেপাইয়ে ছোটো রুপোর থালিতে ছিল শীতকালের ফুল—গাঁদা, কুন্দ, দোপাটি, জবা। প্রতিদিনের জোগান-মতো এই ফুলই মালীর তোলা। কুমু ছাদের কোণে বসে সূর্যোদয়ের দিকে মুখ করে দেবতাকে উৎসর্গ করে দেবে বলে এরা অপেক্ষা করে আছে। আজ তার সেই অনিবেদিত ফুল থালাসুদ্ধ নিয়ে সে হাবলুর কাছে ধরল; বললে, “নেবে ফুল?”
“হাঁ নেব।”
“কী করবে বলো তো?”
“পুজো পুজো খেলব!”
কুমুর কোমরে একটা সিল্কের রুমাল গোঁজা ছিল, সেইটেতে ফুলগুলি বেঁধে দিয়ে ওকে চুমো খেয়ে বললে, “এই নাও।” মনে-মনে ভাবলে, “আমারও পুজো-পুজো খেলা হল।” বললে, “গোপাল, এর মধ্যে কোন্ ফুল তোমার সবচেয়ে ভালো লাগে, বলো তো?”
হাবলু বললে, “জবা।”
“কেন জবা ভালো লাগে বলব?”
“বলো দেখি।”
ও যে ভোর না হতেই জটাইবুড়ির সিঁদুরের কৌটো থেকে রঙ চুরি করেছে।”