পাতা:রংপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (সপ্তম ভাগ).pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

à 08 রঙ্গপুর-সাহিত্য-পরিষৎ পত্রিকা তাহা সুন্দরীরূপে জানা যায় নাই। কেহ কেহ বলেন এহ নদী জলপাইগুড়ীর পাহাড়ের পাদদেশ হইতে নিৰ্গত হইয়াছে। ইহার সত্যতা ভৌগোলিক মহাশয়গণ অনুসন্ধান করুন। ব্ৰহ্মানন্দ শক্তিমস্ত্রের উপাসক ছিলেন। তাহার এই উপাসনা বিষয়ের সাক্ষীস্বরূপ তন্দ্রচিত “তারা রহস্য” ও “শাক্তানন্দ তরঙ্গিণী” নামক দুই খানি গ্ৰন্থ এখনও বিদ্যমান আছে। ব্ৰাহ্মণ বৈদিক দীক্ষা অর্থাৎ উপনয়ন সংস্কারের পর সদগুরুর নিকট তান্ত্রিকা দীক্ষা গ্ৰহণ করিবে । এই দীক্ষা গ্রহণের পর স্ব স্ব সম্প্রদায়ের নিয়মানুসারে পুরশ্চরণাদি দ্বারা স্ব স্ব উপাস্য দেবতার মন্ত্রীচৈতন্য সম্পাদনা করিবে এবং যথাক্রমে মন্ত্রসিদ্ধির পথে অগ্রসর হইবে । অধিকারী ভেদে সাধনার ও ভেদ আছে পশুভাব, বীরভাব ও দিব্যভােব প্রভৃতি অধিকারী ভেদেই গৃহীত হইয়া থাকে । বৰ্ত্তমান সময়ে যেরূপ কালীমার দ্রোহাই দিয়া মদ্যপান করিয়া শাক্ত নামে অভিহিত হয়, ইহাতে প্রকৃত শাস্ত্ৰমৰ্য্যাদা যে কত দূর রক্ষিত হয়, তাহ শাস্ত্ৰজ্ঞ সুধা-পাঠকবৃন্দের অনুমেয় । মদ্যাদি দ্বারা সাধনার অধিকার] বাৰ্ত্তমান সময়ে অতি দুর্লভ | পঞ্চতত্বের যথার্থতত্ত্ব জানিতে হইলে এবং তৎসাহচয্যে উপাসনা করিতে হইলে কিরূপ অধিকারী হইতে হয়, তাহ। শাস্ত্রে সুন্দরীরূপে নিৰ্ণীত হইয়াছে। মাদৃশ ব্যক্তিরা ঐ উপাসনার অধিকারী কি না, তাহ পূৰ্ব্বে বিচার না করিয়া শাস্ত্রার্থের অমৰ্য্যাদা করিয়া সুদী-সমাজে ঘুণিত ও হাস্যাম্পদ হয়। প্ৰকৃত রূপ শাস্ত্ৰতত্ত্বের সমালোচনায় র্যহাদের শক্তি আছে, যাহাঁদের হৃদয় উপাস্য দেবতার শ্ৰীচরণ দর্শনার্থ লোলুপ, তাহারা শাস্ত্রাথের অমৰ্য্যাদা করিয়া মনস্কি-গহিত পস্থায় পদক্ষেপে। কখনই অগ্রসর হয় না। ঐ রূপ গহিত আচরণে যাহাঁদের হৃদয় পন্ধিল, তাহাতে সিদ্ধি তো দূরের কথা, মানবোচিত সদভাব সমূহের অভু্যুদয় ও হইতে পারে না, ইহা এব-সত্য । যাহা হউক মহাত্মা ব্ৰহ্মানন্দ প্রকৃতই শাস্ত্রোক্ত বিধিশাসিত হইয়াই মহামায়ার আরাধনায় বিমুক্ত-মায় হইয়। সিদ্ধত্ব লাভ করিয়াছিলেন। অণিমা লঘিমাদি সিদ্ধি যাহার পাদ-পদ্মের প্রতি পরাগে পরাগে অবস্থিত, সৃষ্টিস্থিতি প্ৰলয়ক ধ্ৰু। ব্ৰহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর যাহার তত্ত্বান্বেষণে সতত নিযুক্ত, তাহার কৃপা লাভ করিতে হইলে মানবকে যে কিরূপ দেবভাবে ভাবিত হইতে হয়, তাহ সামান্য কথায় বা সামান্য জ্ঞানে বুঝাইবার সাধ্য নাই। শাস্ত্ৰে যাহাকে “ন জ্ঞায়সে হরিহাদিভিরপ্যপারা” বলিয়াই নীরব, তাহার প্রভাব, । তাহার শক্তি মনুষ্য বলিতে সক্ষম নহে। যিনি অনিত্য জগৎপ্ৰপঞ্চের মধ্যে নিত্য, যিনি অসার সংসারের সার, যিনি সমুদয় জ্ঞানের, সমুদায় ঐশ্বৰ্য্যের আকার, তাহার আরাধনায় মানব দেবত্ব ও সর্বজ্ঞত্ব লাভ করিয়া সর্বশ্রেষ্ঠত্ব ও দেবত্বের উপর আধিপত্য বিস্তার পূর্বক— সৰ্বোচ্চস্থান লাভে সক্ষম হয় তাহা বলা বাহুল মাত্র। শাস্ত্ৰে বলিয়াছে “মহাবলো মহাবুদ্ধি মহাসাহসিক শুচি: । মহাস্বচ্ছে। দয়া বাংশৰ্চ সৰ্ব্বভূতহিতে রতঃ ॥” উল্লিখিত লক্ষণযুক্ত সাধকই চিতা ও শব্ব সাধনার অধিকারী। এইরূপ অধিকারী বৰ্ত্তমান সময়ে কয়জন আছেন ? মহাত্মা ব্ৰহ্মানন্দ এইরূপ অধিকারী ছিলেন বলিয়াই মহাশ্মশানে মহাদেবীর আরাধনায় দ্বিন্ধিলাভ করিয়া মাতৃদর্শনে কৃতাৰ্থ হইয়াছিলেন এবং আজ আমরা তাহার গুণকীৰ্ত্তন করিয়া