পাতা:রংপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (সপ্তম ভাগ).pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

9.SS রঙ্গপুর-সাহিত্য-পরিষৎ পত্রিকা মূল অবয়ব বলিয়া যে বস্তুর অবয়ব থাকিল না অথবা সে অন্যের অবয়ব হইল, তাহাকেই মূল অবয়ব বলা যুক্তিসিদ্ধ, আর যাহার অবয়ব থাকে, সে কখনই মূল অবয়ব হইতে পারে না। ইহা ও বলা যায় না। যে, যে বস্তুর ধ্বংসে বিশ্রাম স্বীকার করা হইয়াছে, তাহার ধ্বংস হইলে আর কিছুই থাকে না। সাবয়ব দ্রব্যের ধ্বংস হইলে অবয়ব থাকে না, ইহার কোন প্ৰমাণ নাই ; যাহার অবয়ব আছে, তাহার যতই ধ্বংস হয় না কেন, অবশ্যই কোন অবয়ব থাকিবে। যদি অবয়বের ধ্বংস হইয়া শেষ বস্তুর ধ্বংস হয়, তবু অবয়বের অবয়ব থাকিবে; কোন বস্তুই একেবারে বিনষ্ট হইতে পরিবে না । অপিচ, যদি সাবয়ব দ্রব্যের অবয়ববিভাগ হইতে হইতে শেষে ধ্বংস হইয়া যায়—আর কিছুই না থাকে, তবে ধ্বংস হইতে কিছুই উৎপন্ন হইতে পারে না বলিয়া সৃষ্টির অনুপপত্তি হয় । ঘটপটাদি যত কিছু সাবয়বের উৎপত্তি হয়, সমস্তই অবয়ব ( সমবায়ি কারণ ) হইতে উৎপন্ন হইয়া থাকে । ( এজন্য মহর্ষি গোতম বলিয়াছেন সমবায়িকারণাদা দ্রব্যোৎপত্তি: ) অবয়ব ব্যতিরেকে দ্রব্যের উৎপত্তি হইতে পারে না, ইহা বিলক্ষণ অনুভবসিদ্ধ ও যুক্তিসঙ্গত। যদি সমস্ত বস্তুই একেবারে বিনষ্ট হইয়া যায়-মূল অবয়ব না থাকে, তবে ধ্বংস হইতে কিরূপে দ্রব্যের উৎপত্তি হইবে ? কেহ কেহ পরমাণু স্বীকার না করিয়া ত্ৰসরেণুতেই বিশ্রাম স্বীকার করিয়া থাকেন। ( "পরমাণুদ্বাণুকায়োশ্চ মানাভাবা ২ ক্ৰটাবেব বিশ্রাম” ইতি কেচিৎ ) তাহারা বলেন যে ত্ৰসরেণু পৰ্য্যন্ত চক্ষুরিস্ট্রিয় গ্ৰাহ হইয়া থাকে ত্ৰসরেণুর বিভাগ বা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র বস্তু দেখা যায় না। যদি অনুমান দ্বারা প্ৰসিদ্ধ করা হয় তবে ক্ৰমেই অবয়ববিভাগ এবং সূক্ষ্ম বস্তুর অনুমান হইতে হইতে অনবস্থা হইয়া উঠে ; ত্ৰিসরেণুতে অবয়ববিভাগের বিশ্রাম প্ৰত্যক্ষসিদ্ধ, উহার আর অনুমান করিতে হয় না। অতএব ত্ৰসরেণুই অবয়ববিভাগের বিশ্রাম স্থান এবং মূল অবয়ব বলিয়া প্ৰসিদ্ধ হইতে পারে। ঐ মূল অবয়বের সংখ্যা অনুসারে বস্তুর পরিমাণের তারতম্য হইবে। ঐ মত যুক্তিযুক্ত বলিয়া বোধ হয় না, কারণ ত্ৰসরেণুর অবয়ব না থাকিলে প্ৰত্যক্ষ হইতে পারে না । যদি অবয়ব থাকে, তবে সাবয়ব বস্তুর অবয়ববিভাগ কিরূপে নিবারিত হইবে ? কেহ বলেন, অনবস্থা দোষ নিবারণের জন্য ত্ৰসরেণুর অবয়ববিভাগ স্বীকার করিব না ; তাহাও নিতান্ত অযৌক্তিক কথা । কারণ সাবয়বের অবয়ববিভাগ প্ৰাকৃতিক নিয়ম সিদ্ধ; অনবস্থা। ভয়ে প্ৰাকৃতিক নিয়মের অন্যথা হইতে পারে না । আমরাই অনবস্থা দোষে ভীত । হইয়া ঐ দোষ পরিহারের চেষ্টা করিয়া থাকি ; কিন্তু প্ৰাকৃতিক নিয়ম নিজের ব্যাঘাতেই ভীত হয়, অন্য দোষকে ভয় করে না। জালান্তরগতে ভানীে যৎ সূক্ষ্মং দৃশ্যতে রজঃ। ভাগন্তস্য চ ষষ্ঠে যঃ পরমাণু: স উচ্যতে” । ইতি তর্কসুত্ৰং । গবাক্ষদ্বারে রবিকিরণসম্বন্ধে যে সকল সুন্ম সূক্ষ্ম অণু দেখা যায়, তাহাকে ত্ৰসরেণু বলে ; তাহার ছয় ভাগের এক ভাগের নাম পরমাণু। সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম অণু অপেক্ষা পূর্ববর্ণিত কস্তুরীর অণু অনেক অংশে সূক্ষ্ম, তাহাতে কোন সন্দেহ * নাই। যে অণুবীক্ষণ দ্বারা ক্রসরেণুকে সহস্ৰগুণ বৰ্দ্ধিত দেখা যায়, তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট অণুবীক্ষণ * দ্বারা দেখিলেও একস্তুরীর অণু, অণুমাত্র বলিয়া প্ৰতীত হয় না। ঐ দুই অণুর কি প্রকার পরিমাণগত তারতম্য, তাহ অনায়াসে বোধগম্য হইতে পারে। যদি ত্রসরেণু নানা অংশে