বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রকম রকম - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
দারোগার দপ্তর, ৮২ম সংখ্যা।

যে পত্র থাকে, তাহা পড়িয়া উহা কে পাঠাইতেছে, কোথা হইতে আসিতেছে, কোন্‌ স্থানে ও কয়দিবস পরে ইহার টাকা পাওয়া যাইবে, তাহার সমস্ত অবস্থা অবগত হইয়া সেই দলস্থিত একটী লোক সেই হুণ্ডিসহ সেই গদিতে গিয়া উপস্থিত হয়। পরে সেই হুণ্ডি সেই স্থানে প্রদান করিলে, তথাকার নিয়ম অনুযায়ী যে টাকা পাইবার কথা, তাহা অনায়াসেই পাইয়া থাকে। এইরূপ উপায়ে একখানি হুণ্ডির টাকা প্রাপ্ত হইতে পারিলে, তাহাদিগের মনোবাঞ্ছা উত্তমরূপে পূর্ণ হইয়া থাকে। কারণ এক একখানি হুণ্ডিতে সময় সময় দশ হাজার পর্য্যন্ত টাকাও পাওয়া যায়। এইরূপে অসৎ উপায়ে জুয়াচোরগণ যে টাকা বাহির করিয়া লয়, তাহা তাহাদিগের মধ্যে নিয়ম অনুসারে সকলে মিলিয়া বণ্টন করিয়া লয়। ডাকঘরের পিয়নের অংশ, প্রায় অপর সকলের অংশ হইতে অধিক পরিমাণে হইয়া থাকে। এইরূপে একখানি হুণ্ডির টাকা তাহারা হস্তগত করিলে পর, কিছু দিবস পর্য্যন্ত আর এরূপ কার্য্যে হস্তক্ষেপ করে না। যে ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে হুণ্ডি পাঠাইয়াছেন, যখন তিনি জানিতে পারেন, তাঁহার হুণ্ডির টাকা বাহির হইয়া গিয়াছে, অথচ যাহার পাইবার কথা, তিনি পান নাই, তখন ইহার অনুসন্ধান আরম্ভ হয়, এবং ক্রমে এই জুয়াচুরির বিষয় প্রকাশিত হইয়া পড়ে; কিন্ত প্রায়ই প্রকৃত দোষী ধরা পড়ে না। এইরূপে হুণ্ডির জুয়াচোর কয়েকজন, কয়েকজন পিয়নের সহিত কয়েকবার আমা কর্ত্তৃক ধৃত হয়, এবং দীর্ঘকালের নিমিত্ত কারাবাসে প্রেরিত হইয়াছে কিন্তু অদ্যাপিও এই জুরাচুরি বন্ধ হয় নাই।