সম্মত হন নাই। সতীন্দ্রের গুণের মধ্যে এই ছিল যে, সে অতিশয় মিষ্টভাষী, সকলের সহিত বেশ মিলিতে পারিত, ও ভদ্র-ব্যবহারে সকলকে সন্তুষ্ট রাখিতে পারিত।
সনাতনের তৃতীয় পুত্রের নাম শচীন্দ্রনাথ। সে অতিশয় বুদ্ধিমান, এখনকার কালে লেখাপড়ায় যতদূর উতকৃষ্ট হইতে হয়, তাহা হইয়াছে। এণ্ট্রেন্স হইতে আরম্ভ করিয়া, এল-এ, বি-এ, এম-এ প্রভৃতিতে সর্ব্বোচ্চ হইয়া আসিয়াছে। এবার ষ্টুডেণ্টশিপ পরীক্ষায় পাস হওয়াতে, তাহাকে দশ হাজার[১] টাকা পারিতোষিক দিবার জন্য শিক্ষা-বিভাগ আদেশ প্রদান করিয়াছেন।
এই সংবাদ সংবাদ-পত্রে প্রকাশিত হইবার পরই শচীন্রের সহিত নিজ নিজ কন্যার বিবাহ দিবার নিমিত্ত চারিদিক হইতে কন্যাকর্ত্তাগণ সনাতনের বাটীতে আসিতে আরম্ভ করিলেন। কেহবা বংশের প্রলোভন দেখাইয়া, কেহবা অর্থের প্রলোভন দেখাইয়া, এবং কেহবা সুশ্রী বালিকার প্রলোভন দেখাইয়া, সনাতন বাবুর নিকট শচীন্দ্রের বিবাহের কথা উত্থাপন করিতে লাগিলেন। সনাতন বাবু পুরাতন দালাল। তিনি কাহাকেও কোনরূপে অসন্তুষ্ট না করিয়া, বা কাহাকেও কোনরূপ পরিষ্কার উত্তর না দিয়া, সকলকেই হাতে রাখিলেন।
পূর্ব্বে তিনি সতীন্দ্রনাথের বিবাহের নিমিত্ত অনেক চেষ্টা করিরাছিলেন; কিন্ত কোনরূপেই কৃতকার্য্য হইতে পারেন নাই। এখন
- ↑ ষ্টুডেণ্টশিপ পরীক্ষার পারিতোষিক, কোম্পানীর কাগজের সুদ কমিয়া যাওয়ার নিমিত্ত এখন আট হাজার টাকা হইয়াছে; কিন্তু আমি যে সময়ের কথা বলিতেছি, সেই সময় উক্ত পরীক্ষার পারিতোষিক দশ হাজার টাকা ছিল।