হইতে যে কোন ব্যক্তি শচীন্দ্রনাথের বিবাহের প্রস্তাব করিতে তাঁহার নিকট আগমন করিতে লাগিলেন, তাঁহাদিগের মধ্যে কন্যাকর্ত্তার অবস্থা ও বুদ্ধিমত্তার অভাব বিবেচনায় শচীন্দ্রনাথের পরিবর্ত্তে সতীন্দ্রনাথকে দেখাইয়া, তাহারই বিবাহের কথা ঠিক করিতে লাগিলেন।
বিবাহের কথাবার্ত্তা ঠিক করিবার পূর্ব্বে সনাতন যে কন্যাকর্ত্তাদিগকে একটু চালাক-চতুর বিবেচনা করিলেন, বা যাঁহারা আইন-কানুন অবগত আছেন, এরূপ বুঝিলেন, এবং যে সকল ব্যক্তিকে বড়লোক বলিয়া জানিতে পারিলেন, তাঁহাদিগের নিকট তাঁহার স্থিরীকৃত জুয়াচুরি-সংশ্লিষ্ট বিবাহের প্রস্তাব করিতে সাহসী হইলেন না। যে মধ্যবিত্ত লোকদিগকে নিতান্ত নিরীহ বলিয়া তাঁহার বিশ্বাস হইল, তাঁহাদিগের সহিতই সেই জুয়াচুরি-বিবাহের কথাবার্ত্তা ঠিক করিতে প্রবৃত্ত হইলেন।
সনাতন মনে মনে যেরূপ ভাবিতেছিলেন, কার্য্যেও ঠিক সেইরূপ জুটিয়া গেল। একদিবস তিনি আপন বাড়ীতে বসিয়া আছেন, এরূপ সময় একটী লোক আসিয়া তাঁহার বাড়ীতে উপস্থিত হইলেন। সনাতনকে দেখিয়া তিনি কহিলেন, “মহাশয়! আপনার একটী পুত্ত্র এবার ষ্টুডেণ্টশিপ পরীক্ষায় পাস হইয়াছে, একথা কি প্রকৃত?”
সনাতন। হাঁ। কেন মহাশয়!
আগন্তুক। আপনি নাকি তাহার বিবাহের নিমিত্ত চেষ্টা করিতেছেন?
সনাতন। হাঁ, অনেকেই তাহার বিবাহের নিমিত্ত আমার নিকট আসিতেছেন।