পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రి'({ অধ্যাপক ঐ আমাদের নন্দিন। এই যক্ষপুরীতে সর্দার আছে, মোড়ল আছে, সুরঙ্গ সমস্তই বেশ মিল খেয়ে গেছে, কিন্তু ও যে আছে একেবারে বেখাপ। বেসুরের সঙ্গে বেসুর মানায়, তাতে চেঁচামেচির মাতামাতি বরং বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু সুরবাধা তস্কুরাটি আনলে খুব মাতব্বর গোলমালের ভিতরও থেমে যাবার তাগিদ আসে । পুরাণবাগীশ ও বুঝি তোমাদের সেই তমুরা। অধ্যাপক হাঁ, এক একদিন কেবল ওর চলার হাওয়াতেই বস্তুতন্ত্রচর্চার জাল ছিড়ে যায়। ফাকের মধ্যে দিয়ে মনোযোগটা বুনোপাখীর মত হুস করে উড়ে পালায়, সন্ধান পাইনে । (? পুরাণবাগীশ তুমি এখানে আছ কি সুখে ? অধ্যাপক পুঁথিপত্র যা চাই তাই পাই। বিদ্যের মধ্যে তলিয়ে চলেচি, সুখের কথা মনেও নেই। পুরাণবাগীশ তবে ? অধ্যাপক নেশা । জানার পর জানা, তার পরে জানা, নেশার অন্ত নেই। পুরাণবাগীশ ওকেও সেই নেশা জুগিয়ে চলেচ ? অধ্যাপক এতদিন তাই চলছিল। কিছুদিন থেকে ওর বৃষের মত কাঁধটা নাড়া দিয়ে গৰ্জ্জন করে উঠচে, “কিছুই কোথাও পেচচ্চে ল ।” আমি ওকে বলি, “নেশা কি কোথাও পৌঁছয় ? শুধু এগোয়।” পুরাণবাগীশ হঠাৎ এমন কেন হল ? šı অধ্যাপক ও বলে, “তোমরা বস্তুবিদ্যার অন্দরমহলে সিঁধ কাটচে[i]। একটা দেয়াল প্রাণপুরুষ ” হাপিয়ে উঠে বলে, “তাকে ছিনিয়ে আনতে চাই।” পুরাণবাগীশ মানুষটা যে দেখচি বিদ্যের গঠিকাটা । সাধ্য থাকলে তত্ত্বরত্নটি বের করে নেবার জন্যে বিশ্বের কৌটোখানা ও ভেঙে ফেলতে পারত।