পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○> ゲ পুরাণবাগীশ বল কী হে ! তোমার পাকা হাড়ে এমন ঠোকাঠুকি বাধে নাকি ? অধ্যাপক জানার টানের চেয়ে প্রাণের টান বেশি হলেই পাঠশালা-পালাবার বোক সামলানো যায় না । 尊 পুরাণবাগীশ এখন বলো তো তোমাদের রাজার সঙ্গে দেখা হবে কোথায় ? অধ্যাপক দেখার উপায় নেই, ঐ জালটার আড়াল থেকে আলাপ হবে । ১০৪৫ পুরাণবাগীশ বল কী হে । এই জালের আড়াল থেকে ? অধ্যাপক তা নয় তো কী ? ঘোমটার আড়াল থেকে যেরকম রসালাপ হতে পারে সে ধরনের না, একেবারে ছাঁকা কথা। ওর গোয়ালের গোরু বোধ হয় দুধ দিতে জানে না, একেবারেই মাখন দেয়। পুরাণবাগীশ বাজে কথা বাদ দিয়ে আসল কথা আদায় করাই তো পণ্ডিতের ১০৫০ পঙক্তি ১০৪১-১০৫০ S মকরের সঙ্গে দেখা হবে কখন, আর কোথায় ? দেখা হওয়া বলতে আমাদের ভাষায় যা বোঝায় তা কখনই হবে না, কোথাও হবে না । ওর ঘরে কখন নিয়ে যাবে ? ঘরে ? ওর ঘরে যাবার ভরসা রেখো না। ওর ঘরে আমরা কখনো যাইনি । তবে ? এই যে দেয়ালের গায়ে দেখচ জাল-দেওয়া কি একটা ব্যাপার ওরই ফাঁকগুলোকে ও দরকারমত বাড়াতে কমাতে পারে। তারই মধ্যে দিয়ে ওর যেদিন যতটুকু দেখাশোনা পছন্দ, সেইটুকু ছেকে আদায় করে নেয়, বাকিটা বাইরে পড়ে থাকে। অনেকখানি অদরকারীর সঙ্গে অল্প অল্প দরকারী মিশিয়ে বিধাতা এই জগৎটা বানিয়েচেন । যারা রয়ে বসে বিশ্বটার স্বাদ নিতে চায় তাদের পক্ষে সেটা ভালোই। যারা সার পদার্থ শুষে নেবে, চুনে নেবে, কেড়ে নেবে, ছিড়ে নেবে— তারা কলের ভিতর দিয়ে সব ছিনিয়ে নেয়— সেই কলঘরের আঁস্তাকুড়ে আবৰ্জ্জিত সংসারের খোসায় খোলায় ছোবড়ায় টুকরোয় ভরে ওঠে। বুঝলুম এই জালের কাছটাতে দেখা হবে- সে থাকবে ভিতরে আমি থাকব