পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 じ○ অঙ্গ, এ যদি নিশ্চয় না জানতুম তবে কি প্রতিদিন মন্দিরে ভগবানের কাছে এদের জয় প্রার্থনা করতুম ? তাই যদি হয় আমি তাকে মানব না জগৎ কারাগারের সেই সর্দার প্রহরীকে । এ বড় হাসির কথা ! তুমি তাঁকে মানবে না। কি করতে পার তুমি । যত ছোট হই আমি তাকে না মানতে পারি। যতক্ষণ সাধ্য ঘা মেরে মেরে তার বন্দিশালার দরজা ভাঙবার চেষ্টা করতে পারি। তাতে ভাঙবে তোমারই হাড়, দরজা ভাঙবে না। সে আমি জানি। ভাঙুক বা না ভাঙুক এই ভাঙবার সাধনাই আমার মুক্তি । এসব কথা ত তোমার নিজের নয়। এ যেন সেই বিশু পাগলের কথা। হ্যা তারই কথা ত। বন্দিশালায় যেতে যেতে সে আমাকে বলে গেছে, শিকলও বন্ধন নয়, প্রাচীরও বন্ধন নয়, অন্যায়ের কাছে মাথা হেট করে থাকাই বন্ধন। মাথা বিদীর্ণ হওয়াতে দুঃখ নয়, মাথা নীচু হওয়াতেই দুঃখ । হরি হরি । ভগবান যখন ছোটকে মারেন তখন তার ছোট ૨ ৬ দৃশ্যসূচক সংখ্যা] শোনো, শোনো ! শুনতে পাচ্চ ? এখনো তোমার কান খুলল না ? এখানে আমি দিনরাত বসে থাকব যতক্ষণ না তুমি শোন । (গোসাইজির প্রবেশ) গোসাই আ সৰ্ব্বনাশ, এ যে নন্দিনী খঞ্জনী] বসে । নন্দিনী পালিয়ো না, গোসাই, বল আমাকে, বিশুপাগলকে কেন বেঁধে নিয়ে গেলে ? গোসাই আমি ত ঠিক জানিনে, তবে আমার নিশ্চিত বিশ্বাস যে, ওকে না বাধলে এখানকার ব্যবস্থার বন্ধন আলগা হয়ে যেত । নন্দিনী তোমাদের এই ব্যবস্থাবন্ধনের গিঠে গিঠে মানুষের গলায় ফাস লেগেচে —এটাকে কি চিরকাল রক্ষা করতে হবে ? গোসাই ! ভগবানের যে-বিধানে বিশ্বজগতের স্থিতি আমাদের এই বিধান তারই অঙ্গ একথা নিশ্চয় জেনো । নন্দিনী তাই যদি হয়, সেই ভগবানকে মানব না, মানব না সেই জগৎ কারাগারের সর্দার প্রহরীকে !