পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

a○ নেপথ্যে তাকে আনতে বলে দিয়েচি কিন্তু ইচ্ছে ছিল না। নন্দিনী কেন ছিল না ? নেপথ্যে আমি কারো কাছে হার সইতে পারিনে । নন্দিনী বুঝতে পারচি, এই জন্যেই সকলে তোমাকে উৎপাত বলে জানে। আমি তাই নিয়ে কত লোকের সঙ্গে কত ঝগড়া করেচি। কিন্তু— নেপথ্যে আমার হয়েও ঝগড়া করেচ ? কেন ? নন্দিনী সেই প্রথম যেদিন তোমাকে দেখেছিলুম সেদিন ত ঐ জালের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখনি। তোমার চোখে সেদিন ভীষণ চষমাটা ছিল না, বৰ্ম্ম ছিল খোলা। সেই আশ্চর্য রূপ দেখেছিলুম বলেই ত আজ ইচ্ছে করচে যে ঢেউখেলানো ক্ষেতের মাঝখানে তোমার প্রকাণ্ড শরীরটা, সবুজ সাগরের তলা থেকে শাদা পাহাড়ের মত, জেগে উঠুক। সবাই তোমাকে আপনাদের কাজে একবার কাছে দেখে নিক। সেই প্রথম দিনের মত কবে তুমি আবার দেখা দেবে ? নেপথ্যে যখন অনেক সময় পাব। তাড়াতাড়িতে আর আমি তোমাকে দেখা দেব না। পূরো সময় নিয়ে যদি কখনো আমায় দেখতে পাও তাহলে হয়ত আমাকেও ভালোবাসতে পার। नन्मिनी আজ তবে যাই । તેના হয়েচ, এমন সুন্দর। আমার তুলনায় তুমি কতটুকু, তবু তোমাকে ঈর্ষা করি। নন্দিনী তুমি নিজেকে সবার থেকে হরণ করে রেখে বঞ্চিত করেচ ; সহজ হয়ে ধরা দাও না কেন ? নেপথ্যে নিজেকে গুপ্ত রেখে বিশ্বের বড় বড় মালখানার মোটা মোটা জিনিষ চুরি করতে বসেচি। কিন্তু যে দান বিধাতার হাতের মুঠোর মধ্যে ঢাকা, সেখানে তোমার চাঁপার কলির মত আঙুলটি যতটুকু পৌঁছোয় আমার সমস্ত দেহের জোর তার কাছ দিয়ে যায় না। সেই বদ্ধ মুঠো আমাকে খুলতেই হবে। নন্দিনী তোমার এসব কথা আমি ভালো বুঝতে পারিনে, আমি যাই। O প্রায় অপরিবর্তিত । (i) হাতের মুঠোর মধ্যে > হাতের মুঠির মধ্যে