পাতা:রঙ্গলাল-গ্রন্থাবলী.djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• డిసె8 দুই দলে বাণবৃষ্টি ছাইয়ে গগন । শাবণের ধারা কিবা করকা-বর্ষণ। কোনরূপে হীনবল নহে দুই দল । ক্রমেতে প্রবল হ'ল সমর-অনল । মহা ঘোরতর যুদ্ধ কি বণিব জার। শোণিত-প্রবাহ বহে নিবার-আকার । বিজলীর শোভা ধরে যত পুহরণ। কিবা দুই মেঘদল করিছে গর্জন । কাবেরীর সোত রক্তে হইল লোহিত । ক্রমে উড়িষ্যার সৈন্য তীরে আরোহিত। পদাতি পদাতি সঙ্গে যুঝে অহরহঃ । তুরঙ্গী তুরঙ্গী সঙ্গে, রথী রথী সহ । মাতঙ্গে মাতঙ্গে শুও করি জড়াজড়ি। শৈলতলে ভূমিতলে যায় গড়াগড়ি ৷ সমস্ত দিবস যুদ্ধ, নাহি অবসান। হাজার হাজার লোক হারাইল পাণ । ভানু যায় শয্যাগারে সন্ধ্য-করে ধরি। চন্দ্রচূড়া হয়ে সমাগত বিভাবরী। সমর হইল ক্ষান্ত, নিশীথ-সময় । আহিব শ্মশান সম, দেখি লাগে ভয় । মৃত নরদেহ, তার তরঙ্গ, দ্বিরদ। অগণিত কাটামুণ্ড, কাটা হস্ত-পদ । বিকট প্রকট দস্ত, গলে রক্তধারা । হর-নেত্ৰ সম উদ্ধ গত অক্ষিতার। ডাকিতেছে ফেরুপাল, ফেউ ফেউ রবে । শবগন্ধে সমাগত সরিমেয় সবে । শব নিয়ে টানাটানি কলহ ভীষণ । ফেরুপালে গৃধপালে বেধে গেল রণ । কোথা রে মনুষ্য তোর বীর্য্য-অহঙ্কার। মরণাস্তে হও তুমি পশুর আকার । দিবাভাগে রণমদে মেতেছিলে রাগে । শিবা-কুকুরের খাদ্য হলে নিশাভাগে । কাঞ্চীপতি হৃদয়েতে সঞ্চারিত ভয় । জানিলেন গজপতি হীনবল নয় । নগরের প্রাস্তে রণভূমি পরিসর। পরিখা-প্রাকার তাহে রচে বহুতর । ধীরে ধীরে সাজাইল সৈন্য সারি সারি। নিবিড় কানন গণ শল-ভন্নধারী। রজলাল-গ্রন্থাবলী তাহার পশ্চাৎ সেন দেখিতে ভয়াল । হৃদয়ে প্রকাও ঢাল করে করবাল । ঘন ঘন হুহুঙ্কারে পূরিল গগন । স্থানে স্থানে প্ৰজলিত হয় হুতাশন । রজনী হইল শেষ হাঁসে উষাসতী । পুন: পূর্বদিকে প্রভানিত দিনপতি। আরোহণ করি দিব্য রথ মনোহর । রণযাত্রা করিছেন কাঞ্চীর ঈশুর। আই শুন চক্রের নির্ঘেষি ভয়ঙ্কর । বজনদে পরিপূর্ণ যেমন অম্বর । লৌহময় কবাট বিমুক্ত সিংহদ্বারে । শৃঙখলে উঠিছে অগ্নি ইরন্মদাকারে । তুষার-ধবল কাস্তি হয়-চতুষ্টয়। চারু কলেবর স্বর্ণ-অলঙ্কারময়।। বিদ্যুতের বেগে সিংহদ্বার পরিহরে। আই দেখ আসিতেছে সেতুর উপরে। নিৰ্ম্মিত চন্দন-কাষ্ঠে অপূর্ব স্যন্দন। হস্তিদন্তে বিরচিত তাহে সিংহাসন । বিখচিত স্বর্ণ মণি মুক্ত মনোলোভা । নক্ষত্ৰ-ভূষিতা কিবা তমস্বিনী শোভা । স্বর্ণময় নেমি, স্বর্ণময় যুগন্ধর । স্বর্ণময় ধুরী, স্বর্ণময় তপস্কর । মহামূল্য চীনাংশুকে পতাকা রচিত। স্বর্ণসূত্রে গণপতি-মূৰ্ত্তি বিলিখিত। উপনীত হ'ল রথ ভয়াল আহিবে । “জয় গণেশের জয়’ ডাকে সেনা সবে । নৃপে বেড়ি বীরমদে মত্ত সবে মুখে। নাচিতে নাচিতে যায় শত্ৰু-অভিমুখে । আর কি বণিব রণ বর্ণনে না যায় । অবতীর্ণ রুদ্র কিবা হইলা তথায় । কাঞ্চীসেনা তীক্ষশরে ছাইল গগন । শক্রদলে হয় যেন বিষ-বরিমণ । উঠে ছুটে বাণ যেন ফুহারার ধারা। শূন্য হ’তে নামে যথা খসি পড়ে তারা উড়িষ্যার সৈন্য তাহে হইল অস্থির । দেহ বহি পড়ে রক্ত, শরে বিদ্ধ শির।। বিভাবী সমাগত ভানু-ভাতি নাশি। কাঞ্চীর বিজয়-ভানু সমুদিত আসি ।