পাতা:রঙ্গলাল-গ্রন্থাবলী.djvu/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুরুত্ত্বন্দরী শুনি শাহ দুই ভেয়ে সুখ-সংমিল । ক্ৰোধে জলে যেন যুগাস্তের হুতাশন । রাজ্য-অধিকার তত মনে নাহি লাগে । শ্যালকের অপমান অস্তরেতে জাগে । কবে হবে মিবারের কুল-গৰ্ব্বনাশ । শিশোদ্রীয় সীমস্তিনী সহিত বিলাস । কিরূপে হইবে ক্ষত্ৰকুলের কুস্তন। অনুক্ষণ নানারূপ উপায় চিন্তন।। দৈববশে একদা শুনিল আকবর । ভিকানের রাজভ্রাতা পৃথ্বী কবিবর। শক্তিসিংহ-সূতা সতী বনিতা তাহার। রূপে গুণে অনুপমা রমা-অবতার । মনে ভাবে পৃথীসিংহ মম অনুগত। দিল্লী-দরবারে কাব্যকলায় নিরত । আনিব আন্দরে আমি তার প্রমদারে । দেখিব কেমনে রাণ রাখে এই বারে । সতী নাম ধরে সে রমণী রতুকলা । প্রতাপের ভ্রাতৃস্থতা প্রবলা অবলা । প্রবলা হউক বালা জাতিতে অবলা । কতক্ষণ সহিবেক পুরুষের ছল । ধনের পিপাসা তার প্রভুত্বের আশ । রমণীর ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম শৰ্ম্ম মৰ্ম্ম-নাশ । পলোভের দাসী তারা স্তবের কিঙ্করী। ইথে বশীভূত নহে কে আছে সুন্দরী। এত ভাবি ষড়যন্ত্ৰ ঠাহরে সম্রাট । অস্তঃপুরে বসাইব যুবতীর হাট । দিল্লীপুরে আছে যত ধনীর গেহিনী । কিবা মহারাজা রাণা মানস-মোহিনী । কিবা ওমর। আমির বণিক্‌ কি সৈনিক । দরবারে নিয়োজিত যাহারা দৈনিক । সকলে পাঠাবে দারা বেগম-মহলে । নানারূপ বাণিজ্য বসিবে সেই স্থলে । গোপনে ভ্ৰমিব তথা ছদ্মবেশ ধরি। নিরখিব নানা নারীনিধি নেত্র ভরি । অবশ্য আসিবে তথা শক্তির নন্দিলী । লীলা-কল্পলতামূলে রস নিস্যন্দিনী। ভাঁজিবে রসের হাট রজনী সময়ে । যখন যাইবে সবে আপন অলিয়ে । q:$ কোশলে করিব তীরে নিজ করগত । সাধিব সকল সাধ অভিমত যত । ইহা ভিনু কেমনে হইব চক্ৰেশুর। এখনো ভারতে তাছে এক নরবর। প্রভাতের তারা পায় এখনো এ দেশে । - আছে রাণ। হিন্দুপতি জয়-অবশেষে । বার বার কুটুম্বিতা-করণ-কারণ। তাহার নিকটে কত দূতের প্রেরণ। করিলাম কতবার তন্ত্রমন্ত্র নানা । কোনরূপে বশীভূত না হইল রাণী । এবার কি হবে গতি শুনিবে যখন । বিক্রীত নেরোজা-হাটে তনুজারতন । মানের থাকিবে মান নিষ্কপটক পথ । এক কার্য্যে সিদ্ধ হবে সব মনোরথ । পরদিন দিল্লীপুরে ঘোষণা প্রকাশ । হইবে “নেরোজা” পৰ্ব্ব পুতি মাস মাস । ভাগ্যধর-ভামিনীর বসিবেক হাট । মহ’লে মহলে হবে নানারূপ নাtট । বিবিধ বিদেশী নারী বাক্য আলাপন । তাহে হবে নবরূপ ভাষার স্বজন ।। সকল জাতির মধ্যে না থাকিবে দ্বেষ । জানা যাবে রাজ্যের সংবাদ সবিশেষ । নারীমুখে কোন কথা গুপ্ত নাহি রবে । সব কথা বাদৃশার সুগোচর হবে। শুনি দিল্লীপুরে বৃদ্ধি আনন্দ-উৎসাহ । ন-ভূত ন-ভাবী কীত্তি করিলেন শাহ। কিছুমাত্র অবিশ্বাস নাহি কোনক্রমে। স্বচছন্দে সকলে যায় প্রথমে প্রথমে । নেরোজা আমোদমদে মত্ত অবিরত। এইরূপে কতকাল হইলে বিগত । একদা দিল্লীশ এই চিন্তা করে মনে । হইয়াছে সুসময় সতী-অাকর্ষণে।। সতীর ভাসুর জায়া ভিকানের রাণী। অগে তারে কোনরূপে করতলে আনি। পগল্‌ভ প্রমদা সেই পেঢ়া প্রৌঢ়মতি। অনায়াসে ভিকানেরী ভিক্ষা দিবে রতি। পরে কণীয়সী সেই রূপসী সতীরে । সুযোগে আনিয়ে দিবে বিলাস-মন্দিরে ।