বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রবীন্দ্রনাথ - অজিতকুমার চক্রবর্তী (১৯৬০).pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আইন পাস হউক বা না হউক, বিলাতের লোক আমাদের করুণোক্তিতে কর্ণপাত করুক বা না করুক, আমার স্বদেশ— আমার চিরন্তন স্বদেশ, আমার পিতৃপিতামহের স্বদেশ— আমার সন্তানসন্ততির স্বদেশ, আমার প্রাণদাতা শক্তিদাতা সম্পদদাতা স্বদেশ। কোনো মিথ্যা আশ্বাসে ভুলিব না, কাহারো মুখের কথায় ইহাকে বিকাইতে পারিব না, একবার যে হস্তে ইহার স্পর্শ উপলব্ধি করিয়াছি সে হস্তকে ভিক্ষাপাত্র বহনে আর নিযুক্ত করিব না— সে হস্ত মাতৃসেবার জন্য সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করিলাম।··· যে পথ কঠিন, যে পথ কণ্টকসংকুল, সেই পথে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হইয়াছি।’

‘খেয়া’র কবিতার এই সময়েই আরম্ভ। এই ফলাফলবিবেচনাহীন ত্যাগই, ‘রাজার দুলাল যাবে আজি মোর ঘরের সমুখ-পথে’ কবিতাটিতে সুন্দরভাবে প্রকাশ পাইয়াছে।

ঘোমটা খসায়ে বাতায়নে থেকে
নিমেষের লাগি নিয়েছি মা দেখে,
ছিঁড়ি মণিহার ফেলেছি তাহার
পথের ধুলার ’পরে।
মোর  হার-ছেঁড়া মণি নেয় নি কুড়ায়ে,
রথের চাকায় গেছে সে গুঁড়ায়ে,
চাকার চিহ্ন ঘরের সমুখে
পড়ে আছে শুধু আঁকা।
আমি  কী দিলেম কারে জানে না সে কেউ—
ধুলায় রহিল ঢাকা।

১১১