তবু রাজার দুলাল গেল চলি মোর
ঘরের সমুখপথে,
মোর বক্ষের মণি না ফেলিয়া দিয়া
রহিব বলো কী মতে?
“আগমন” কবিতাটিতে ‘বাংলা দেশের অখণ্ড স্বরূপের’ এই প্রচণ্ড আবির্ভাবের কথাই লিখিতে হইয়াছে। এই রাজার আগমনের অনেক আভাস ইঙ্গিত অনেক দিন হইতেই পাওয়া যাইতেছিল, তাঁহার দূতের পদধ্বনিকে বাতাসের শব্দ, তাঁহার চাকার ঝনঝনিকে মেঘের গর্জন মনে করিয়া দেশ আলস্যে সুপ্ত ছিল। রাজা যখন আসিলেন তখন সমস্ত রিক্ত— কোনো আয়োজনই নাই। কিন্তু সেই ভালো হইল, দরিদ্র ঘরে যাহা-কিছু আছে তাহাই দিয়া তাঁহাকে বরণ করিতে হইল এই ভালো— ত্যাগ ইহাতেই পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল।
“দান” কবিতাটিও ঐ একই সময়ের লেখা। তাহাতেও ঐ ত্যাগকঠিন সাধনার রুদ্রগীতি ফুটিয়াছে।
ভেবেছিলেম চেয়ে নেব,
চাই নি সাহস ক’রে—
সন্ধেবেলায় যে মালাটি
গলায় ছিলে প’রে,
আমি চাই নি সাহস ক’রে।
মালা লইতে আসিয়া চাহিয়া দেখেন যে
এ তো মালা নয় গো, এ যে
তোমার তরবারি।
এই তরবারি, এই বেদনা, এই সুকঠিন ত্যাগ, ইহাকেই জীবনময় গ্রহণ করিবার কথা ‘খেয়া’র আরম্ভের কথা।
১১২