বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রবীন্দ্রনাথ - অজিতকুমার চক্রবর্তী (১৯৬০).pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কেবলই জাগিয়া জাগিয়া উঠিয়াছে। জলস্থল-আকাশ সমস্ত মনুষ্যলোককে আপনার চৈতন্যের আনন্দময় বিস্তারের দ্বারা পরিপূর্ণরূপে উপলব্ধির জন্যই তিনি এই তপোবন গড়িয়াছিলেন। কিন্তু অনেক দিন পর্যন্ত এই আশ্রমেরও গভীরতর সাধনাটি কী তাহা তাঁহার ধারণার মধ্যে সুস্পষ্ট হইয়া উঠে নাই। আশ্রমের সঙ্গে যাঁহারা দীর্ঘকাল সংযুক্ত আছেন তাঁহারা জানেন যে, স্বাদেশিক উত্তেজনার একটা ঢেউ ইহার উপর দিয়াও বহিয়া গিয়াছিল। জানি না বিধাতা বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে কবির চিত্তবীণাকে কেমন নিগূঢ় উপায়ে একই ছন্দে বাঁধিয়া দিয়াছেন— যে জন্য কোনো খণ্ডতার মধ্যে তাঁহার চিত্ত দীর্ঘকাল থাকিতে পারে না, নানা পথ ঘুরিয়া অবশেষে আবার ইহারই মধ্যে প্রত্যাবর্তন করে।

আকাশ ছেয়ে মন-ভোলানো হাসি
আমার প্রাণে বাজালো আজ বাঁশি।
লাগল আলস পথে চলার মাঝে,
হঠাৎ বাধা পড়ল সকল কাজে,
একটি কথা পরান জুড়ে বাজে—
‘ভালোবাসি হায় রে ভালোবাসি’।
সবার বড়ো হৃদয়-হরা হাসি।

কিন্তু এ ওজর তো দেশের লোকে শুনিবে না। এ যে কর্মভীরুতা নয়, কিন্তু কর্মকে অতিক্রম করিয়া জীবনকে অনন্তের মধ্যে, আনন্দের মধ্যে একেবারে বিলীন করিয়া দেওয়া— এ কথা কাহাকেও বুঝাইয়া বলিবার নয়। তাই

আমার  দলের সবাই আমার পানে
চেয়ে গেল হেসে—

কিন্তু আমি

১১৫