আপনার অস্তিত্বকে জলাঞ্জলি দিবার বৃহৎ আনন্দ, এ দুইই ‘খেয়া’র কবিতার মধ্যে একসঙ্গে আছে। ‘কৃপণ’ বলিতেছে— আমি কেবল পাইতেই থাকিব এই আশায় রাজার দর্শনে বাহির হইয়াছিলাম, কিন্তু তিনি যখন আমার কাছে চাহিলেন তখন বেশি কিছু দিতে পারিলাম না; একটি কণা মাত্র দিলাম; ঘরে আসিয়া দেখি তাহাই সোনা হইয়া গিয়াছে! তখন কাঁদিয়া বলি:
তোমায় কেন দিই নি আমার
সকল শূন্য ক’রে!
তার মানে, আপনার দিকে কিছুই রাখিলে চলিবে না— আমার কাজ, আমার দেশ, আমাদের সফলতা, আমাদের শক্তি— ‘আমার’ ‘আমার’ এই বন্ধনের মধ্যে সমস্ত বিশ্বভুবনের নিবিড় আনন্দস্বরূপ জীবনের সেই অধীশ্বর নাই। এইটিকেই খুব শক্ত আঘাতে ছিন্ন করিলে তখনই তাঁহার আবির্ভাব সর্বত্র প্রত্যক্ষ হইয়া উঠিবে।
হেরে তোমার করব সাধন,
ক্ষতির ক্ষুরে কাটব বাঁধন,
শেষ দানেতে তোমার কাছে
বিকিয়ে দেব আপনারে।
আপনার বন্ধনই বন্ধন; এই আপনাকে যত বড় নামই দাও, তাহাকে যত জ্ঞান যত কর্ম যত মহত্ত্ব যত সৌন্দর্য দিয়াই আবৃত কর না কেন, সে ‘বন্দী’র অবস্থা— আপনার কৃতকীর্তির মধ্যে আপনি বন্দী হইয়া থাকা।
“বন্দী” কবিতাটিতে কবি তাহাই বলিতেছেন:
ভেবেছিলাম আমার প্রতাপ
করবে জগৎ গ্রাস,
১১৭