সহিত বিচ্ছেদ হইয়াছিল, আপনার মধ্যে আপনি অবরুদ্ধ হইয়া তিনি বেদনা পাইতেছিলেন, সেইটা কাটিয়া গিয়া পুনরায় বিশ্বের আনন্দলোকের সঙ্গে মিলিত হইবার আত্মকাহিনীর এক অংশ এই নাটকের মধ্যে আছে।
‘ছবি ও গানে’র অধিকাংশ কবিতা এই সময়েই লিখিত হয়। ‘কড়ি ও কোমল’ তাহার পরে। কবিতা এই সময় হইতেই অনেকটা সংহত আকার ধারণ করিয়াছে— চিত্রগুলি নির্দিষ্ট, হৃদয়ভাবগুলিও স্পষ্ট এবং ভাষা ও ছন্দ নিয়মিত। কিন্তু এই সময়ের সকল কবিতার মধ্যেই কল্পনার একটা স্বপ্নাবেশ লাগানো আছে। কল্পনার রঙে সমস্ত সৌন্দর্যকে একটু বিশেষ ঘের দিয়া লইবার ও ভোগ করিবার একটি ভাব ইহাদের মধ্যে আছে। বাস্তব বলিতে যাহা বুঝায়, এ কবিতাগুলি তাহা নয়— বাস্তব জগতের সঙ্গে ইহাদের সম্বন্ধ অল্পই। ইহাদের মধ্যে আপনারই কল্পনার রসকে বাহিরের জিনিসে স্থাপিত করিয়া দেখিবার একটি আনন্দ আছে। যেটুকু বিশেষভাবে ভোগের সীমায় আসিয়া ধরা দেয়, কল্পনার রঙে রঙিন হইয়া হৃদয়কে তৃপ্ত করে, সেইটুকু চুনাইয়া লইবার একটি প্রয়াস। সৌন্দর্যভোগের একটি বিশেষ অবস্থার কাব্য ছবি ও গান, এবং কড়ি ও কোমল। এই দুই কাব্যের মধ্যে প্রভেদ কেবল এই যে, ছবি ও গানে কল্পনার ভাগটা বেশি, কড়ি ও কোমলে হৃদয়াবেগ বেশি।
মোহিত বাবু-সম্পাদিত গ্রন্থাবলীতে এই সময়কার অধিকাংশ কবিতাকে ‘যৌবন-স্বপ্ন’ নামের মধ্যে ফেলা হইয়াছে। পক্ষীদের মধ্যে যেমন দেখা যায় যে, তাহাদের মিলনের কাল উপস্থিত হইলে তাহাদের ডানাগুলি বিচিত্র রঙেচঙে মণ্ডিত হইয়া উঠে, তেমনি হৃদয়বৃত্তির মুকুলিত অবস্থায় একটি স্বপ্নাবেশ আছে— একটি স্বর্ণ-আভাময় মোহ তখন নানা
৩৭