উপবনে কুড়াতে শেফালি। বারে বারে
শৈশবকর্তব্য হ’তে ভুলায়ে আমারে,
ফেলে দিয়ে পুঁথিপত্র, কেড়ে নিয়ে খড়ি,
দেখায়ে গোপন পথ দিতে মুক্ত করি
পাঠশালা-কারা হতে—
বাল্যে এই যিনি অনন্ত বাল্য, যৌবনের নানা প্রেম-সম্বন্ধের মধ্যে গভীরতর বাসনা ও বেদনার মধ্যেও তিনি কি ধরা দেন নাই? ঐ যে পত্রাংশ পূর্বেই তুলিয়াছি “আমাদের সব স্নেহ সব ভালোবাসাই রহস্যময়ের পূজা”, সকল মানুষের ভিতর দিয়া ক্ষণে ক্ষণে কি সেই প্রেমাস্পদ রহস্যময়ের আবির্ভাব হয় নাই? সেই সাক্ষিজীবনের মধ্যেই যৌবনের সমস্ত আবেগ পূর্ণ হইয়া আছে।
তার পরে একদিন—কি জানি সে কবে···
চমকিয়া হেরিলাম— খেলাক্ষেত্র হতে
কখন অন্তরলক্ষ্মী এসেছ অন্তরে
আপনার অন্তঃপুরে গৌরবের ভরে
বসে আছ মহিষীর মতো।···
ছিলে খেলার সঙ্গিনী,
এখন হয়েছ মোর মর্মের গেহিনী,
জীবনের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। কোথা সেই
অমুলক হাসি-অশ্রু! সে চাঞ্চল্য নেই,
সে বাহুল্য কথা। স্নিগ্ধ দৃষ্টি সুগম্ভীর
স্বচ্ছনীলাম্বরসম; হাসিখানি স্থির
অশ্রুশিশিরেতে ধৌত; পরিপূর্ণ দেহ
মঞ্জরিত বল্লরীর মতো।
৫৫