অন্যায় হয় না। কিন্তু এক জীবন হইতে অন্য জীবনে যাইবার গভীরতর কারণ আছে, আপাত-বিচ্ছেদের মধ্যেও সত্য বিচ্ছেদ কোথাও নাই। সুতরাং এখন তাহারই আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া যাক্।
৪
নানা কারণে ১৩০২ সালে ‘সাধনা’ কাগজখানি উঠিয়া গেল। তখন চৈতালির আরম্ভ হইয়াছে— ১৩০২-এর চৈত্র মাসেই চৈতালির অধিকাংশ কবিতা রচিত হইয়াছে।
এই সময়ের কতকগুলি চিঠি হইতে বেশ বুঝিতে পারি এই জীবনের মধ্যে কবি অসম্পূর্ণতা কোথায় বোধ করিতেছিলেন। কেবলমাত্র কবির বা শিল্পীর জীবনের মধ্যে, আপনার দিকে, আপনার ভোগের দিকে সমস্ত টানিয়া রাখিবার ভাব আছে। সেই জন্য অধিকাংশ কবির জীবনে কাব্যটাই প্রধানতঃ দেখিবার বিষয়, জীবনটা নয়। এক দিক দিয়া দেখিতে গেলে জীবনের বিচিত্রতার মধ্যে কবিদের যেমন প্রবেশ এমন কোনো মহাপুরুষেরও নয়— কল্পনার তীব্র আলোকের দ্বারা ইঁহারা মানব-প্রকৃতির যত জটিলতা যত রহস্যের ভিতরে গিয়া পৌঁছেন এমন আর কেহই যাইতে পারেন না— তথাপি ইঁহাদের জীবনটা সকল হইতে নির্লিপ্ত আপনার ভাবলোকের মধ্যেই অবস্থান করে। তাহার কারণ জীবনকে কবিরা সৃষ্টির দিক্ হইতে দেখেন, তাই পুরাপুরি বাস্তবের মধ্যে ঝাঁপ দিয়া পড়িয়া ভালোয় মন্দে উত্থানে পতনে জীবনকে বড় করিয়া, শক্ত করিয়া, সত্য করিয়া গড়িবার সাধনা তাঁহাদের অবলম্বন করা কঠিন হয়। ততটুকু বাস্তব ইঁহাদের পক্ষে প্রয়োজন যতটুকু নহিলে ভাব আপনার জোর পায় না, আপনার প্রতিষ্ঠা পায় না। ব্রাউনিঙের
৬৯