বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রবীন্দ্রনাথ - অজিতকুমার চক্রবর্তী (১৯৬০).pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মোর সন্ধ্যাদীপালোক, পথ-চাওয়া ছুটি চোখ,
যত্নে গাঁথা মালা।···
রাত্রি মোর, শান্তি মোর, রহিল স্বপ্নের ঘোর,
সুস্নিগ্ধ নির্বাণ—
আবার চলিনু ফিরে বহি ক্লান্ত নত শিরে
তোমার আহ্বান।

 এখানে একটি কথা বলিয়া রাখি যে, কবির জীবনের তরফ হইতেই এ-সকল কবিতাকে যে পড়িতে হইবে তাহা মনে করা ভুল। ‘অশেষ’ কবিতাটি যে কবির জীবনের এক অবস্থা হইতে অবস্থান্তরে যাইবার বেদনাকে প্রকাশ করিতেছে মাত্র তাহা নহে। আমরা যেখানেই যে আশ্রয়কে শেষ মনে করিয়া দাঁড়ি টানিতে চাহিয়াছি সেখানেই সেই শেষের মধ্যে অশেষের ডাক আসিয়া পৌঁছিয়াছে— সে কি কর্মে কি ধর্মে, কি রাষ্ট্রচেষ্টায় কি শিল্পসৃষ্টিতে, কি বিজ্ঞানে কি দর্শনে— আমাদের কোথাও থামিবার জো নাই— মত হইতে মতান্তরে, কত অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠানের ভাঙাগড়া কত বিদ্রোহ-বিপ্লবের মধ্য দিয়া, কত বৃহৎ হইতে বৃহত্তর সত্যের আবিষ্কারে আমাদিগকে ক্রমাগতই যাত্রা করিতে হইতেছে। সেইজন্যই কোনো পাশ্চাত্য কবি বলিয়াছেন:

 Out of the fruition of success shall come forth something which will make a greater struggle necessary. কৃতকার্যতার সার্থক মূর্তির ভিতর হইতে এমন কিছু বাহির হইয়া পড়িবেই পড়িবে যাহা গভীরতর দ্বন্দ্বকে জাগাইয়া তুলিবে।

 জীবনে আমাদের খণ্ড-সফলতার ক্ষণ-সমাপ্তির মধ্যে অনেকবার ক্রন্দন করিয়া বলিতে হয়:

৭৮