যে পথে অনন্ত লোক চলিয়াছে ভীষণ নীরবে
সে পথপ্রান্তের
এক পার্শ্বে রাখো মোরে, নিরখিব বিরাট স্বরূপ
যুগযুগান্তের।
“বৈশাখ” কবিতাটির মধ্যেও এই রুদ্রের আহ্বান:
জ্বলিতেছে সম্মুখে তোমার
লোলুপ চিতাগ্নিশিখা লেহি লেহি বিরাট অম্বর,
নিখিলের পরিত্যক্ত মৃতস্তূপ বিগত বৎসর
করি ভস্মসার—
চিতা জ্বলে সম্মুখে তোমার।
দুঃখসুখ, আশা ও নৈরাশ্যের দ্বারা ক্রমাগত জীবনকে খণ্ডিত করিয়া আপনার দিকে তাহাকে টানিয়া রাখিবার যে বেদনা কবিকে পীড়ন করিতেছিল, সেই আপনার বন্ধন হইতে মুক্তিলাভের জন্য সমস্ত ‘কল্পনা’র কবিতাগুলির মধ্যে কি কান্না! সেই আপনার সমস্ত সুখদুঃখের উপরে বৈশাখের রুদ্ররৌদ্রবিকীর্ণ বিস্তীর্ণ বৈরাগ্যের গেরুয়া অঞ্চল পাতিয়া দিয়া আপনাকে দগ্ধ করিয়া নিঃশেষ করিয়া ফেলিবার আকাঙ্ক্ষাই ‘হে ভৈরব হে রুদ্র বৈশাখ’এর গম্ভীর ছন্দে প্রকাশ পাইয়াছে।
স্বদেশের প্রতি অনুরাগের এবং তাহার নিকটে আত্মসমর্পণ করিবার আকাঙ্ক্ষার আভাস ‘কল্পনা’র অনেক কবিতার মধ্যে বিদ্যমান। “মাতার আহ্বান” “ভিক্ষায়াং নৈব নৈব চ” প্রভৃতি কবিতা দৃষ্টান্তস্বরূপে উল্লেখ করা যাইতে পারে। কিন্তু স্বদেশবোধ এখনও অতি ক্ষীণ। কেবল আপনার পূর্বজীবনের সঙ্গে বিচ্ছেদজনিত যে বিষাদ ও বৈরাগ্য কবির অন্তরে নামিয়াছে তাহাই যেন একটা বড় বাণী বলিবার উপক্রম
৮০