এই যে, তাহা কৌতুক কিম্বা করুণাকে ব্যঞ্জিত করিবার পক্ষে অত্যন্ত অনুকূল। ঠিক ‘মনের কথা-জাগানে’ ভাষা। সংস্কৃতের স্থূল শব্দের দ্বারা কৌতুক করা চলে না। দ্বিতীয় সুবিধা এই যে, কথিত ভাষায় হসন্তওয়ালা শব্দ আমরা ব্যবহার করিয়া থাকি বলিয়া ছন্দটাকে খুব বাজাইয়া তোলা যায়— সুর পদে পদে হসন্তের উপলখণ্ডে প্রতিহত হইয়া কলধ্বনি করিতে থাকে। যথা:
দিঘির্ জলে ঝলক্ ঝলে
মানিক্ হীরা,
শর্ষে-ক্ষেতে উঠ্ছে মেতে
মৌমাছিরা।
‘ক্ষণিকা’ হইতে কবিতার এই রচনাভঙ্গী অবলম্বন করিয়া আজ পর্যন্ত কবি তাহাই রক্ষা করিয়া আসিয়াছেন।
‘ক্ষণিকা’ এই নামের দ্বারা এবং মুখবন্ধের প্রথম কবিতাটিতেই কবি যেন বলিতে চান যে, তিনি কেবল ক্ষণিকের মধ্যেই সম্পূর্ণরূপে তৃপ্ত:
ধরণীর পরে শিথিল-বাঁধন
ঝলমল প্রাণ করিস যাপন।
কিন্তু কথাটা কি সত্যই তাই! জীবনদেবতার কবি কি অনন্তের অনুভূতিকে বিদায় দিয়া ক্ষণিক সুখের উৎসবকেই পর্যাপ্ত বলিয়া মনে করিতে পারেন? এখানেও:
তোমারে পাছে সহজে বুঝি
তাই কি এত লীলার ছল?
বাহিরে যবে হাসির ছটা
ভিতরে থাকে আঁখির জল।
কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক বড় গম্ভীর প্রকৃতির, এ-সকল
৮৫