বোধের তপস্যা নয়।··· বোধের তপস্যার বাধা হচ্ছে রিপুর বাধা— প্রবৃত্তি অসংযত হয়ে উঠলে চিত্তের সাম্য থাকে না, সুতরাং বোধ বিকৃত হয়ে যায়।···
‘এইজন্যে ব্রহ্মচর্যের সংযমের দ্বারা বোধশক্তিকে বাধামুক্ত করবার শিক্ষা দেওয়া আবশ্যক। ভোগবিলাসের আকর্ষণ থেকে অভ্যাসকে মুক্তি দিতে হয়, যে-সমস্ত সাময়িক উত্তেজনা লোকের চিত্তকে ক্ষুব্ধ এবং বিচারবুদ্ধিকে সামঞ্জস্যভ্রষ্ট করে দেয়, তার ধাক্কা থেকে বুদ্ধিকে সরল করে বাড়তে দিতে হয়।
‘যেখানে সাধনা চলছে, যেখানে জীবনযাত্রা সরল ও নির্মল, যেখানে সামাজিক সংস্কারের সংকীর্ণতা নেই, যেখানে ব্যক্তিগত ও জাতিগত বিরোধবুদ্ধিকে দমন করবার চেষ্টা আছে, সেইখানেই ভারতবর্ষ যাকে বিশেষভাবে বিদ্যা বলেছে তাই লাভ করবার স্থান।’
এই ব্রহ্মচর্যাশ্রমের আদর্শ চারি আশ্রমধর্মের আদর্শের অংশমাত্র। কবিকে যেখানে প্রাচীন ভারতবর্ষ মুগ্ধ করিয়াছিল সে ওই চতুরাশ্রমের আদর্শ। “ততঃ কিম্” নামক প্রবন্ধে তিনি এই আদর্শটিকে ফলাইয়া ব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহারই কিয়দংশ এখানে দিলাম:
‘জগতের সম্বন্ধগুলিকে আমরা ধ্বংস করিতে পারি না, তাহাদের ভিতর দিয়া গিয়া তাহাদিগকে উত্তীর্ণ হইতে পারি।··· এই ভিতর দিয়া যাওয়াটাই সাধনা।··· গ্রহণ এবং বর্জন, বন্ধন এবং বৈরাগ্য, এই দুটাই সমান সত্য— একের মধ্যেই অন্যটির বাসা, কেহ কাহাকেও ছাড়িয়া সত্য নহে।··· শংকর ত্যাগের এবং অন্নপূর্ণা ভোগের মূর্তি— উভয়ে মিলিয়া যখন একাঙ্গ হইয়া যায় তখনই সম্পূর্ণতার আনন্দ।···
‘প্রাচীন সংহিতাকারগণ হিন্দুসমাজে হরগৌরীকে অভেদাঙ্গ করিতে চাহিয়াছিলেন।··· শিব ও শক্তির, নিবৃত্তি ও প্রবৃত্তির সম্মিলনই
৯৮