সমাজের একমাত্র মঙ্গল··· ইহাই তাঁহারা বুঝিয়াছিলেন।···
‘ভারতবর্ষ জানিত, সমাজ মানুষের শেষ লক্ষ্য নহে, মানুষের চির-অবলম্বন নহে— সমাজ হইয়াছে মানুষকে মুক্তির পথে অগ্রসর করিয়া দিবার জন্য।···
‘এইজন্য ভারতবর্ষ মানুষের জীবনকে যেরূপে বিভক্ত করিয়াছিলেন কর্ম তাহার মাঝখানে ও মুক্তি তাহার শেষে।
‘দিন যেমন চার স্বাভাবিক অংশে বিভক্ত—পূর্বাহ্ন, মধ্যাহ্ন, অপরাহ্ন এবং সায়াহ্ন ভারতবর্ষ জীবনকে সেইরূপ চারি আশ্রমে ভাগ করিয়াছিল। এই বিভাগ স্বভাবকে অনুসরণ করিয়াই হইয়াছিল। আলোক ও উত্তাপের ক্রমশ বৃদ্ধি এবং ক্রমশ হ্রাস যেমন দিনের আছে, তেমনি মানুষের ইন্দ্রিয়শক্তির ক্রমশ উন্নতি এবং ক্রমশ অবনতি আছে।··· প্রথমে শিক্ষা, তাহার পরে সংসার, তাহার পরে বন্ধনগুলিকে শিথিল করা, তাহার পরে মুক্তি ও মৃত্যুর মধ্যে প্রবেশ— ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ ও প্রব্রজ্যা।···
‘ত্যাগ করিতেই হইবে, ত্যাগের দ্বারাই আমরা লাভ করি।···
‘প্রাচীন সংহিতাকারগণ আমাদের শিক্ষাকে, আমাদের গার্হস্থ্যকে অনন্তের মধ্যে (শরীর হইতে সমাজে, সমাজ হইতে নিখিলে, নিখিল হইতে অধ্যাত্মক্ষেত্রে)[১] সেই শেষ পরিণামের অভিমুখ করিতে চাহিয়াছিলেন।···সেইজন্য আমাদের শিক্ষা কেবল বিষয়শিক্ষা, কেবল গ্রন্থশিক্ষা ছিল না, তাহা ছিল ব্রহ্মচর্য।’
আমি যে লেখাটি হইতে যে যে স্থান উদ্ধার করিলাম তাহাতে প্রাচীন ভারতবর্ষের আদর্শ কবি কী বুঝিয়াছিলেন তাহা পরিষ্কার বোধগম্য হইবে। এ কথা যেন কেহ না মনে করেন যে, স্বাদেশিকতার
৯৯
- ↑ বন্ধনীভুক্ত অংশ বঙ্গদর্শনে বা ‘ধর্ম' গ্রন্থে দেখা যায় না ।