পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

४२० • ब्रशैठ-बळ्नावलौ বিদ্যাপতি কহে প্রাণ জুড়াইতে লাখে না মিলল একে ৷” বিদ্যাপতির অনেক স্থলে ভাষার মাধুৰ্য্য, বর্ণনার সৌন্দৰ্য্য আছে, কিন্তু চণ্ডিদাসের নূতনত্ব আছে, ভাবের মহত্ব আছে, আবেগের গভীরতা আছে। যে বিষয়ে তিনি লিখিয়াছেন, তাহাতে তিনি একেবারে মগ্ন হইয়া লিথিয়াছেন । তিনি নিজের রজকিনী প্রণয়িনী সম্বন্ধে যাহা লিখিয়াছেন, তাহা উদ্ধৃত করি,— “শুন রজকিনী রামি, ও দুটি চরণ শীতল জানিয়া শরণ লইনু আমি । তুমি বেদ-বাগিনী, হরের ঘরণী, তুমি সে নয়নের তারা, তোমার ভজনে ক্রিসন্ধ্যা যাজনে, তুমি সে গলার হারা। রজকিনী রূপ কিশোরী স্বরূপ কামগন্ধ নাহি তায়, রজকিনী-প্রেম নিকষিত হেম বড়ু চণ্ডিদাসে গায় ।” চণ্ডিদাসের প্রেম কি বিশুদ্ধ প্রেম ছিল ! তিনি প্রেম ও উপভোগ উভয়কে স্বতন্ত্র করিয়া দেখিতে পারিয়াছেন । তাই তিনি প্রণয়িনীর রূপ সম্বন্ধে কহিয়াছেন “কামগন্ধ নাহি তায় ।” আর এক স্থলে চণ্ডিদাস কহিয়াছেন, “রজনী দিবসে হব পরবশে, স্বপনে রাখিব লেহা, একত্র থাকিব নাহি পরশিব ভাবিনী ভাবের দেহ ।” দিবস রজনী পরবশে থাকিব, অথচ প্রেমকে স্বপ্নের মধ্যে রাখিয়া দিব । একত্রে থাকিব অথচ তাহার দেহ স্পর্শ করিব না –অর্থাৎ এ প্রেম বাহ্য জগতের দশনস্পর্শনের প্রেম নহে, ইহা স্বপ্নের ধন, স্বপ্নের মধ্যে আবৃত থাকে, জাগ্রত জগতের সহিত ইহার সম্পর্ক নাই । ইহা শুদ্ধ মাত্র প্রেম, আর কিছুই নহে। যে কালে চণ্ডিদাস ইহা লিখিয়াছিলেন, ইহা সে কালের কথা নয়।