পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२७ । । রবীন্দ্র-রচনাবলী বাহিরের লোকে তাহাকে দরিদ্র বলিয়া মনে করে বটে, কিন্তু র্তাহার গৃহের মধ্যে দেখ দেখি, অন্নপূর্ণ চিরদিন অধিষ্ঠান করিতেছেন। আর ঐ যে মলিনতা দেখিতেছ, শ্মশানের ভস্ম দেখিতেছ, মৃত্যুর চিহ্ন দেখিতেছ, ও কেবল উপরে—ঐ শ্মশান-ভস্মের মধ্যে আচ্ছন্ন রজত-গিরি-নিভ চারু চন্দ্রাবতংস অতি সুন্দর অমর বপু দেখিতেছ না কি ? উনি যে মৃত্যুঞ্জয় ; আর, মৃত্যুকে কি আমরা চিনি ? আমরা মৃত্যুকে করাল-দশনা লোল-রসনা মূৰ্ত্তিতে দেখিতেছি, কিন্তু ঐ মৃত্যুই ইহার প্রিয়তমা, ঐ মৃত্যুকে বক্ষে ধরিয়া ইনি আনন্দে বিহবল হইয়া আছেন । কালীর যথার্থ স্বরূপ আমাদের জানিবার কোন সম্ভাবনা নাই, আমাদের চক্ষে তিনি মৃত্যু আকারে প্রতিভাত হইতেছেন, কিন্তু ভক্তেরা জানেন কালীও যা গৌরীও তাই ; আমরা তাহার করালমূৰ্ত্তি দেখিতেছি, কিন্তু তাহার মোহিনীমূৰ্ত্তি কেহ কেহ বা দেখিয়া থাকিবেন । শিবকে সকলে যোগী বলে । ইনি কাহার যোগে নিমগ্ন রহিয়াছেন ? যোগী হে, কে তুমি হৃদি-আসনে, বিভূতিভূষিত শুভ্রদেহ, নাচিছ দিক বসনে । মহা আনন্দে পুলক কায়, গঙ্গা উথলি উছলি যায়, ভালে শিশু শশী হাসিয়া চায়, জটাজুট ছায় গগনে । সৌন্দৰ্য্য ও প্রেম। সৌন্দর্য্যের কারণ পূর্বে এক স্থানে বলিয়াছি, যে, যখন জগতের স্বপক্ষে থাকি, তখনই আমাদের প্রকৃত স্থখ, যখন স্বার্থ খুজিয়া মরি তখনই আমাদের ক্লেশ, শ্রাস্তি, অসন্তোষ । ইহা হইতে আর-একটা কথা মনে আসে। যাহাদিগকে আমরা সুন্দর বলি তাহাদিগকে আমাদের কেন ভাল লাগে ?