পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৬২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

beio রবীন্দ্র-রচনাবলী আপনাকে তাহ দিব।” রাজা ইহা শুনিয়া মনে মনে বিচার করিলেন—“আমি দান করিব, এৰং তিনি গ্রহণ করিবেন, এই বিহিত বিধান ; কিন্তু তিনি দান কৱিৰেন আর আমি গ্রহণ করিব, ইহা বিপরীত বিধি ।” রাজা যখন এই সঙ্কটসম্বন্ধে চিম্ভ করিয়া বিলম্ব করিতেছিলেন, তখন দুইটি ব্রাহ্মণ বিবাদ করিতে করিতে সেই স্থানে উপস্থিত হইলেন, এবং রাজাকে দেখিয়া বিচারের জন্য তাহার নিকট প্রার্থনা করিলেন । প্রথম ব্যক্তি বলিলেন—“এই ব্রাহ্মণ আমাকে দক্ষিণার সহিত একটি গাভী প্রদান করিয়াছেন । আমি ইহাকে তাহ প্রত্যুপণ করিতেছি, কিন্তু ইনি আমার হাত হইতে তাহা কেন গ্রহণ করিবেন না ?’ অপর ব্যক্তি বলিলেন— “আমি ইহা প্রথমে গ্রহণ করি নাই, আর ইহা প্রার্থনাও করি নাই, তবে ইনি কেন ইহা আমাকে বলপূর্বক গ্রহণ করাইতে ইচ্ছা করিতেছেন ?” २ २ २ রাজা ইহা শুনিয়া বলিলেন—“এই অভিযোগকারীর অভিযোগ ঠিক নহে । আপনি গাভী গ্রহণ করিবার পর যিনি ইহা দিয়াছেন তাহাকেই আবার বলপূৰ্ব্বক ফিরাইয়া দিতেছেন কেন ?” রাজা ইহা বলিলে ইন্দ্র অবসর পাইয় তাহাকে বলিলেন—“হে রাজন, আপনি যদি ইহাই ন্যায্য বলিয়া জানেন, তবে ঐ জপকারী ব্রাহ্মণের নিকট প্রার্থনা করিয়া তৎপরে প্রাপ্ত বরটি তাহার নিকট হইতে গ্রহণ করিতেছেন না কেন ??? রাজা ইহার উত্তর ভাবিয়া না পাইয়া সেই জপকারী ব্রাহ্মণকে বলিলেন—“ভগবন, আপনার জপের অৰ্দ্ধেক অংশের ফল বররুপে আমাকে প্রদান করুন।” অনস্তর সেই জপকারী ব্রাহ্মণ বলিলেন—“ভালো, আমার জপের অৰ্দ্ধেক ফল তুমি গ্রহণ করে।” এই বলিয়া তিনি রাজাকে বর প্রদান করিলেন । রাজা এই বরের দ্বারা সৰ্ব্বলোকেই নিজের গতি লাভ করিলেন, এবং সেই জপকারীও শিবলোক প্রাপ্ত হইলেন ।

  • &\○

আর এক প্রকারে পৃথিবীর ধ্বংস ঘটিতে পারে। একটি প্রকাণ্ড উদ্ধাপ্রস্তর কোনও একদিন আকাশ হইতে পড়িতে পারে । বস্তুত প্রস্তরখণ্ড আকাশ হইতে পৃথিৰীতে পড়িতেছেই । এইরূপ নানা আয়তনের প্রস্তর মিউজিয়ামে দেখা যায়, তাহাদের কোনো-কোনোট ওজনে বহুশত পাউণ্ড ভারি । এমন হইতে পারে, কোনও এক সময়ে বহুশত মাইল আয়তনের পাথর পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হইবে ।