পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) প্রথম খণ্ড.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী বিমল সরসী ষবে হোত তারাময়ী, ধরিতে কিরণগুলি হইত অধীর । যখনি গো নিশীথের শিশিরাশ্র-জলে ফেলিতেন উষাদেবী সুরভি নিশ্বাস, গাছপালা লতিকার পাতা নড়াইয়া ঘুম ভাঙ্গাইয়া দিয়া ঘুমন্ত নদীর যখনি গাহিত বায়ু বন্য-গান তার, তখনি বালক-কবি ছুটিত প্রাস্তরে, দেখিত ধান্তের শিষ দুলিছে পবনে। দেখিত একাকী বসি গাছের তলায়, স্বর্ণময় জলদের সোপানে সোপানে উঠিছেন উষাদেবী হাসিয়া হাসিয়া । নিশা তারে ঝিল্লীরবে পাড়াইত ঘূম, পূর্ণিমার চাদ তার মুখের উপরে তরল জোছনা-ধারা দিতেন ঢালিয়া, স্নেহময়ী মাতা যথা স্বপ্ত শিশুটির মুখপানে চেয়ে চেয়ে করেন চুম্বন। প্রভাতের সমীরণে, বিহঙ্গের গানে উষা তার স্বথনিদ্রা দিতেন ভাঙ্গায়ে । এইরূপে কি একটি সঙ্গীতের মত, তপনের স্বর্ণময়-কিরণে প্লাবিত প্রভাতের একখানি মেঘের মতন, নন্দন বনের কোন অপসর-বালার সুখময় ঘুমঘোরে স্বপনের মত কবির বালক-কাল হইল বিগত । যৌবনে যখনি কলি করিল প্রবেশ, প্রকৃতির গীতধ্বনি পাইল শুনিতে, বুঝিল সে প্রকৃতির নীরব কবিতা ।