পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

さ>br রবীন্দ্র-রচনাবলী সে কেবল বোবা গভীরতা, সে তো কলধ্বনিত বেগ নয়। আমি কেবল গ্রহণ করতেই পারি কিন্তু নাড়া দিতে পারি নে। আমার সঙ্গ মানুষের পক্ষে উপবাসের মতো— বিমল এতদিন যে কী দুর্ভিক্ষের মধ্যেই ছিল, তা আজকের ওকে দেখে বুঝতে পারছি। দোষ দেব কাকে ? হায় রে, ভরা বাদর মাহ ভাদর শূন্ত মন্দির মোর। আমার মন্দির যে শূন্ত থাকবার জন্যেই তৈরি—ওর যে দরজা বন্ধ। আমার যে-দেবতা ছিল যে মন্দিরের বাইরেই বসে ছিল, এতকাল তা বুঝতে পারি নি। মনে করেছিলুম, অর্ঘ্য সে নিয়েছে বরও সে দিয়েছে—কিন্তু শূন্ত মন্দির মোর, শূন্ত মন্দির মোর । প্রতি বৎসর ভাদ্রমাসে পৃথিবীর এই ভরা-যৌবনে আমরা দুজনে শুক্লপক্ষে আমাদের শামলদহর বিলে বোটে করে বেড়াতে যে তুম। কৃষ্ণাপঞ্চমীতে যখন সন্ধ্যাবেলাকার জ্যোংস্কা ফুরিয়ে গিয়ে একেবারে তলায় এসে ঠেকত তখন আমরা বাড়ি ফিরে আসতুম। আমি বিমলকে বলতুম, গানকে বারে বারে আপন ধুয়োয় ফিরে আসতে হয় ;–জীবনে মিলন-সংগীতের ধুয়োই হচ্ছে এইখানে, এই খোলা প্রকৃতির মধ্যে ; এই ছলছল-করা জলের উপরে যেখানে ‘বায়ু বহে পুরবৈয়া’, যেখানে শুামল পৃথিবী মাথায় ছায়ার ঘোমটা টেনে নিস্তব্ধ জ্যোৎস্নায় কুলে কুলে কান পেতে সারারাত আড়ি পাতছে, সেইখানেই স্ত্রীপুরুষের প্রথম চার চক্ষের মিলন হয়েছিল, দেয়ালের মধ্যে নয়,—তাই এখানে আমরা একবার করে সেই আদিযুগের প্রথম-মিলনের ধুয়োর মধ্যে ফিরে আসি, যে-মিলন হচ্ছে হরপার্বতীর মিলন, কৈলাসে মানস-সরোবরের পদ্মবনে। আমার বিবাহের পর দু-বছর কলকাতায় পরীক্ষার হাঙ্গামে কেটেছে— তার পরে আজ এই সাত বছর প্রতি ভাদ্রমাসের চাদ আমাদের সেই জলের বাসরঘরে বিকশিত কুমুদবনের ধারে তার নীরব শুভশঙ্খ বাজিয়ে এসেছে। জীবনের সেই এক সপ্তক এমনি করে কাটল । আজ দ্বিতীয় সপ্তক আরম্ভ হয়েছে । ভাদ্রের সেই শুক্লপক্ষ এসেছে সে-কথা আমি তো কিছুতেই ভুলতে পারছি নে । , প্রথম তিন দিন তো কেটে গেল—বিমলের মনে পড়েছে কিনা জানি নে কিন্তু মনে করিয়ে দিল না। সব একেবারে চুপ হয়ে গেল, গান থেমে গেছে । छब्रां यांमब्र मांइ छांमब्र শুষ্ঠ মন্দির মোর। 蠱