পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘরে-বাইরে ミbや সদর-খাজনা চালান যেতে আর দিন-পাচেক আছে সেই সঙ্গেই ও-টাকাটা আমি কলকাতার ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেব। দেখো ভাই, ভুলে ব'সো না, তোমার যে-রকম ভোলা মন কিছুই বলা যায় না। এঘর থেকে যদি টাকা চুরি যায় তাহলে আমারই টাকা চুরি যাবে, তোমার কেন যাবে বউরানী । ঠাকুরপো, তোমার ওই সব কথা শুনলে আমার গায়ে জর আসে । আমি কি আমার-তোমার ভেদ করে কথা কচ্ছি ? তোমারই যদি চুরি যায় সে কি আমাকে বাজবে না ? পোড়া বিধাতা সব কেড়ে নিয়ে আমার যে লক্ষ্মণ দেওরটি রেখেছেন তার মূল্য বুঝি আমি বুঝি নে ? আমি ভাই তোমাদের বড়োরানীর মতো দিনরাত্রি দেবতা নিয়ে ভুলে থাকতে পারি নে, দেবতা আমাকে যা দিয়েছেন সেই আমার দেবতার চেয়েও বেশি। কী লো ছোটোরানী, তুই যে একেবারে কাঠের পুতুলের মতো চুপ করে রইলি ? জান ভাই ঠাকুরপো, ছোটোরানী মনে ভাবে আমি তোমাকে খোশামোদ করি । তা তেমন দায়ে পড়লে থোশমোদই করতে হত । কিন্তু তুমি কি আমাদের তেমনি দেওর যে খোশামোদের অপেক্ষা রাখ ? যদি হতে ওই মাধব চক্রবর্তীর মতো, তাহলে আমাদের বড়োরানীরও দেবসেবা আজ ঘুচে যেত, আধপয়সাটির জন্যে তোমার হাতে পায়ে ধরাধরি করেই দিন কাটত । তাও বলি, তাহলে ওর উপকার হত, বানিয়ে বানিয়ে তোমার নিন্দে করবার এত সময় পেত না । এমনি করে মেজোরানী অনর্গল বকে যেতে লাগলেন, তারই মাঝে মাঝে ছেচকিটা ঘণ্টট চিংড়িমাছের মুড়োটার প্রতিও ঠাকুরপোর মনোযোগ আকর্ষণ করা চলতে থাকল। আমার তখন মাথা ঘুরছে। আর তে সময় নেই, এখনই একটা উপায় করতে হবে,— কী হতে পারে, কী করা যেতে পারে, এই কথা যখন বার বার মনকে জিজ্ঞাসা করছি তখন মেজোরানীর বকুনি আমার কাছে অত্যন্ত অসহ বোধ হতে লাগল। বিশেষত আমি জানি মেজোরানীর চোখে কিছুই এড়ায় না—তিনি ক্ষণে ক্ষণে আমার মুখের দিকে চাচ্ছিলেন, কী দেখছিলেন জানি নে, কিন্তু আমার মনে হচ্ছিল আমার মুখে সমস্ত কথাই যেন স্পষ্ট ধরা পড়ছিল। দুঃসাহসের অন্ত নেই—আমি ষেন নিতান্ত সহজ কৌতুকে হেসে উঠলুম—বলে উঠলুম, আসল কথা, আমার পরেই মেজোরানীর যত অবিশ্বাস, চোরডাকাত সমস্ত दों८छ क५ ।। মেজোরানী মূচকে ছেলে বললেন, তা ঠিক বলেছিল লো, মেয়েমানুষের চুরি বড়ো