পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

මA8 রবীশ্রখরচনাবলী তাহা নহে। সাহিত্যেও সেইরূপ জজ-আদালতের কাজ বন্ধ থাকিতে পারে না । জাপিলের শেষমীমাংসা অতিদীর্ঘকালসাপেক্ষ—ততক্ষণ মোটামুটি বিচার একরকম পাওয়া যায় এবং অবিচার পাইলেও উপায় নাই। যেমন সাহিত্যের স্বাধীন রচনায় এক-একজনের প্রতিভা সর্বকালের প্রতিনিধিত্ব গ্রহণ করে, সর্বকালের আসন অধিকার করে, তেমনি বিচারের প্রতিভাও আছে, এক-একজনের পরখ করিবার শক্তিও স্বভাবতই অসামান্ত হইয়া থাকে। যাহা ক্ষণিক, যাহা সংকীর্ণ, তাহা তাহাদিগকে ফাকি দিতে পারে না ; যাহা ধ্রুব, যাহা চিরন্তন, এক মুহূর্তেই তাহা তাহারা চিনিতে পারেন। সাহিত্যের নিত্যবস্তুর সহিত পরিচয়লাভ করিয়া নিত্যত্বের লক্ষণগুলি তাহারা জ্ঞাতসারে এবং অলক্ষ্যে অন্তঃকরণের সহিত মিলাইয়া লইয়াছেন—স্বভাবে এবং শিক্ষায় তাহারা সর্বকালীন বিচারকের পদ গ্রহণ করিবার যোগ্য । আবার ব্যবসাদার বিচারক ও আছে। তাহাদের পুথিগত বিদ্যা । তাহারা সারস্বতপ্রাসাদের দেউড়িতে বসিয়া হাকডাক, তর্জনগর্জন, ঘুষ ও ঘুষির কারবার করিয়া থাকে—অস্তঃপুরের সহিত তাহাদের পরিচয় নাই। তাহারা অনেক সময়েই গাড়িজুড়ি ও ঘড়ির চেন দেখিয়াই তোলে। কিন্তু বীণাপাশির অনেক অন্তঃপুরচারী আত্মীয় বিরলবেশে দীনের মতো মার কাছে যায় এবং তিনি তাহাদিগকে কোলে লইয়া মন্তকান্ত্রাণ করেন। তাহারা কখনো-কখনে। তাহার শুভ্র অঞ্চলে কিছু-কিছু ধূলিক্ষেপও করে—তিনি তাহ হাসিয়া ঝাড়িয়া ফেলেন। এই সমস্ত ধূলামাটি সত্ত্বেও দেবী যাহাদিগকে আপনার বলিয়া কোলে তুলিয়া লন, দেউড়ির দরোয়ানগুলা তাহাদিগকে চিনিবে কোন লক্ষণ দেখিয়া ? তাহার পোষাক চেনে, তাহারা মানুষ চেনে না। তাহারা উৎপাত করিতে পারে, কিন্তু বিচার কবিবার ভার তাহাদের উপর নাই । সারস্বতদিগকে অভ্যর্থনা করিয়া লইবার ভার ধাহাদের উপরে আছে, র্তাহারাও নিজে সরস্বতীর সস্তান—ৰ্তাহারা ঘরের লোক, ঘরের লোকের মর্যাদা বোঝেন । }\రిe