পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থ-পরিচয় &SA ঢালাই হতে থাকলে সেটা পুতুলের রাজ্য হয়, প্রাণের রাজ্য হয় না। তবু যদি নিতান্তই শ্রেণীবিভাগের শখ সাহিত্যেও মেটাতে হয় তাহলে ধর্মশাস্ত্রনির্দিষ্ট হিন্দু ও অহিন্দু এই দুই শ্রেণী না ধরে যথাসম্ভব মানবস্বভাবের বৈচিত্র্য অনুসারে শ্রেণীবিভাগ করা কর্তব্য । স্বদেশপ্রেম লেখিকার কাছে আমার শেষ নিবেদন এই যে, গল্পের ভিতর থেকে গল্পের চেয়ে বেশি কিছু যদি আদায় করতেই হয় তাহলে অন্তত গল্পের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আর-একটি কথা এই যে, আমিও দেশকে ভালোবাসি, তা যদি না হত তাহলে দেশের লোকের কাছে লোকপ্রিয় হওয়া আমার পক্ষে কঠিন হত না । সত্য প্রেমের পথ আরামের নয়, সে-পথ দুর্গম । সিদ্ধিলাভ সকলের শক্তিতে নেই এবং সকলের ভাগ্যেও ফলে না কিন্তু দেশের প্রেমে যদি দুঃখ ও অপমান সহ করি তা হলে মনে এই সাম্বনা থাকবে যে কাটা বাচিয়ে চলবার ভয়ে সাধনায় মিথ্যাচরণ করি নি। দুঃখ পাই তাতে দুঃখ নেই কিন্তু আমার সকলের চেয়ে বেদনার বিষয় এই যে, যা সত্য মনে করি তাকে প্রকাশ করতে গিয়ে লেখিকার মতো অনেক সরল, শ্রদ্ধাবান, স্বদেশবৎসল ও সকরুণ হৃদয়ে বেদন দিয়েছি, সে আমার দুর্ভাগ্য কিন্তু সে আমার অপরাধ নয় । ঘরে-বাইরে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হইবার পর বহুকাল পর্যন্ত ইহার বিরুদ্ধ সমালোচনা চলিয়াছিল। ১৩২৬ সালের চৈত্র মাসের প্রবাসীতে “সাহিত্যবিচার” প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ এ-সম্বন্ধে স্বীয় বক্তব্য প্রকাশ করেন ; নিয়ে তাহা भूजिउ श्हेल : • ঘরে-বাইরে উপন্যাসখানা লইয়া বাংলার পাঠকমহলে এখনো কথা চলিতেছে । হৃদয়াবেগ যখন অত্যন্ত প্রবল হয় তখন মানুষ গদ্য ছাড়িয়া পদ্য ধরে । সম্প্রতি তাহারও স্বচনা প্রকাশ পাইতেছে। এক জায়গায় দেখিলাম, ঘরে-বাইরে সম্বন্ধে ক্ষোভ চোদ্দ অক্ষরের লাইনে লাইনে রক্তবর্ণ হইয়া ফুটিয়াছে। ইহাতে পদ্যসাহিত্যের বিপদ চিন্তা করিয়া উদ্বিগ্ন হইলাম । পাছে ইহা সংক্রামক হইয়া পড়ে সেইজন্ত এ-সম্বন্ধে উদাসীন থাকিতে পারিলাম না। ஆ পছন্দ লইয়া মানুষের সঙ্গে তর্ক চলে না। ভাতৃ হরির অনেক পূর্ব হইতেই কবিরা এ-সম্বন্ধে অবস্থাবিশেষে হাল ছাড়িয়া বসিয়া আছেন। স্বয়ং