পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংযোজন বসন্ত-উৎসব NRSRO) এ-বৎসর দোলপূর্ণিমা ফায়ুন পার হয়ে চৈত্রে পীেছল। আমের মুকুল নিঃশেষিত আমবাগানে মৌমাছির ভিড় নেই, পলাশ-ফোঁটার পালা ফুরল, গাছের তলায় শুকনে শিমুল তার শেষমধু পিপড়েদের বিলিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়েছে। কাঞ্চনশাখা প্ৰায় দেউলে, ঐশ্বর্যের অল্প কিছু বাকি । কেবল শালের বীথিকা ভরে উঠেছে। মঞ্জরিতে । উৎসব-প্ৰভাতে আশ্রমকন্যারা ঋতুরাজের সিংহাসন প্ৰদক্ষিণ করলে এই পুম্পিত শালের বনে, তার বন্ধলে আবির মাখিয়ে দিলে, তার ছায়ায় রাখলে মাল্যপ্ৰদীপের অর্ঘ্য । চতুর্দশীর চাদ যখন অন্তদিগন্তে, প্ৰভাতের ললাটে যখন অরুণ-আবিরের তিলকরেখা ফুটে উঠল, তখন আমি এই ছন্দের নৈবেদ্য বসন্ত-উৎসবের বেদির জন্য রচনা করেছি। brS 62 আশ্রমসখা হে শাল, বনস্পতি, লাহাে আমাদের নতি । তুমি এসেছিলে মোদের সবার আগে প্ৰাণের পতাকা রাঙায়ে হরিৎরাগে, সংগ্ৰাম তব কত কঙ্কার সাথে, কত দুদিনে কত দুর্যোেগারাতে জয়গৌরবে উর্ধের্ব তুলিলে শির হে বীর, হে গভীর । তোমার প্রথম অতিথি বনের পাখি, স্নিগ্ধ আদরে গানেরে দিয়েছ বাসা, মৌন তোমার পেয়েছে আপনি ভাষা, সুরে কিশলয়ে মিলন ঘটালে তুমি মুখরিত হল তোমার জন্মভূমি । আমরা যেদিন আসন নিলেম আসি কহিল স্বাগত তব পল্লবরাশি, তার পর হতে পরিচয় নব নব দিবসরাত্রি ছায়াবীথিতলে তব মিলিল আসিয়া নানা দিগদেশ হতে তরুণ জীবনস্রোতে । * বৈশাখতাপ শান্ত শীতল করো, নববর্ষারে করি দাও ঘনতর, শুভ্ৰ শরতে জ্যোৎস্নার রেখাগুলি মধুলক্ষ্মীরে আনিয়াছে আহবানি মঞ্জরিভরা সুন্দর তব বাণী । আজি বসন্তে লাহাে এ কবির গীতি,