পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা 8 S পুরবালা জিনিসপত্র গুছাইতে গেল, এমন সময় নৃপবালা ও নীরবালা ঘরে প্রবেশ করিয়াই পলায়নােদ্যত হইল নীর দরজার আড়াল হইতে আর-একবার ভালো করিয়া তাকাইয়া মেজদিদি বলিয়া ছুটিয়া আসিল নীরবালা । মেজদিদি, তোমাকে ভাই জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু ঐ চাপিকানে বাধছে । মনে হচ্ছে তুমি যেন কোন রূপকথার রাজপুত্র, তেপান্তর মাঠ পেরিয়ে আমাদের উদ্ধার করতে এসেছ । নীৱর সমুচ্চ কণ্ঠস্বরে আশ্বস্ত হইয়া নৃপও ঘরে প্রবেশ করিয়া মুগ্ধনেত্ৰে চাহিয়া রহিল। নীরবালা । (তাহাকে টানিয়া লইয়া) আমন করে লোভীর মতো তাকিয়ে আছিস কেন । যা মনে করছিস তা নয়, ও তোর দুষ্মন্ত নয়- ও আমাদের মেজদিদি । झञिब्द ||- ইয়মধিক মনোজ্ঞা চাপিকানে নাপি তহীী কিমিব হি মধুরাণাং মণ্ডনং নাকৃতীনাম । অক্ষয় । মূঢ়ে, তোরা কেবল চাপিকানটা দেখেই মুগ্ধ। গিলটির এত আদর ? এ দিকে যে খাটি সোনা দাড়িয়ে হাহাকার করছে । নীরবালা । আজকাল খাটি সোনার দর যে বড়ো বেশি, আমাদের এই গিলটিই ভালো । কী বল ভাই মেজদিদি । শৈলর কৃত্রিম গোফটা একটু পাকাইয়া দিল রসিক । (নিজেকে দেখাইয়া) এই খাটি সোনাটি খুব সস্তায় যাচ্ছে ভাই, এখনো কোনো ট্যাকশালে গিয়ে কোনো মহারানীর ছাপটি পর্যন্ত পড়ে নি । , নীরবালা । আচ্ছা বেশ, সেজদিদিকে দান করলুম। (রসিকদাদার হাত ধরিয়া নৃপর হাতে সমর্পণ कब्रिव्न) ब्रांख् िउाधिन Cडा डाई ? নৃপবালা । তা আমি রাজি আছি । রসিকদাদাকে একটা চৌকিতে বসাইয়া সে তাহার মাথার পাকা চুল তুলিয়া দিতে লাগিল নীর শৈলর কৃত্রিম গোফে তা দিয়া পাকাইয়া তুলিবার চেষ্টা করিতে লাগিল শৈলবালা । আঃ, কী করছিস, আমার গোফ পড়ে যাবে । রসিক । কাজ কী, এ দিকে আয়-না ভাই, এ গোফ কিছুতেই পড়বে না । নীরবালা । আবার ! ফের ! সেজদিদির হাতে সঁপে দিলুম কী করতে । আচ্ছা রসিকদাদা, তোমার মাথার দুটাে-একটা চুল কাচা আছে, কিন্তু গোফ আগাগোড়া পাকালে কী করে । রসিক । কারও কারও মাথা পাকবার আগে মুখটা পাকে । অক্ষয় । তা হলে আমি একবার চিরকুমার-সভার মাথায় হাত বুলিয়ে আসি । নীরবালা - 5mR জয়যাত্রায় যাও গো, ওঠে ওঠে। জয়রথে তব । মোরা জয়মালা গেথে আশা চেয়ে বসে রব । - আঁচল বিছায়ে রাখি পথঘুলা দিব ঢাকিফিরে এলে হে বিজয়ী, হৃদয়ে বরিয়া লব । অক্ষয় । রথ প্ৰস্তুত, এখন কী আনিব বলো । নীরবালা - আঁকিয়ো হাসির রেখা সজল আঁখির কোণে নববসন্তশোভা এনো এ শূন্যবনে । সোনার প্রদীপে জ্বালো আঁধার ঘরের আলো, পরাও রাতের ভালে চাদের তিলক নব । brዘSዒ