চিরকুমার-সভা . 8SRay বটে।--তা, ভালো কাজ মাত্রই দুঃসাধ্য। আমরা যদি পাচটি দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞ লোক পাই তা হলে আমরা যা কাজ করব তা চিরকালের জন্য ভারতবর্ষকে আচ্ছন্ন করে দেবে। ” শ্ৰীশ । কিন্তু, আপনি যে বলছিলেন গোরুর গাড়ির চাকা প্রভৃতি ছােটাে ছোটাে জিনিসচন্দ্ৰবাবু। ঠিক কথা, আমি তাকেও ছোটাে মনে করে উপেক্ষা করি নে এবং বড়ো কাজকেও অসাধ্য জ্ঞান করে ভয় করি নৌ পূর্ণ। কিন্তু, সভার অধিবেশন সম্বন্ধেওচন্দ্ৰবাবু। সে-সব কথা কাল হবে পূৰ্ণবাবু। আজ তবে চললুম। [প্ৰস্থান বিপিন । ভাই শ্ৰীশ, চুপচাপ যে । এক মাতালের মাতলামি দেখে অন্য মাতালের নেশা ছুটে যায়। চন্দ্ৰবাবুর উৎসাহে তোমাকে সুদ্ধ দমিয়ে দিয়েছে। শ্ৰীশ । না হে, অনেক ভাববার কথা আছে । উৎসাহ কি সব সময়ে, কেবল বকবকি করে । কখনো বা একেবারে নিস্তব্ধ হয়ে থাকে, সেইটেই হল সাংঘাতিক অবস্থা । বিপিন। পূৰ্ণবাবু, হঠাৎ পালােচ্ছ যে ? পূর্ণ। সভাপতিমশায়কে রাস্তায় ধরতে যাচ্ছি, পথে যেতে যেতে যদি দৈবাৎ আমার দুটাে-একটা কথায় কৰ্ণপাত করেন । বিপিন । ঠিক উলটো হবে । তার যে-কটা কথা বাকি আছে সেইগুলো তোমাকে শোনাতে শোনাতে কোথায় যাবার আছে সে কথা ভুলেই যাবেন । বনমালীর প্রবেশ বনমালী। ভালো আছেন শ্ৰীশবাবু। বিপিনবাবু ভালো তো ? এই-যে পূৰ্ণবাবুও আছেন দেখছি। তা, বেশ হয়েছে। আমি অনেক বলে কয়ে সেই কুমারটুলির পাত্রী দুটিকে ঠেকিয়ে রেখেছি। শ্ৰীশ । কিন্তু আমাদের আর ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা একটা গুরুতর কিছু করে ফেলব। পূর্ণ। আপনারা বসুন শ্ৰীশবাবু। আমার একটা কাজ আছে। বিপিন । তার চেয়ে আপনি বসুন পূৰ্ণবাবু। আপনার কাজটা আমরা দুজনে মিলে সেরে দিয়ে আসছি। পূর্ণ। তার চেয়ে তিন জনে মিলে সারাই তো ভালো। বনমালী । আপনারা ব্যস্ত হচ্ছেন দেখছি । আচ্ছা, তা আর-এক সময় আসব। তৃতীয় দৃশ্য চন্দ্ৰবাবুর বাড়ি চন্দ্ৰমাধববাবু নির্মলা চন্দ্রবাবু। নির্মল । নির্মলা । কী মামা । চন্দ্ৰবাবু। নির্মল, আমার গলার বোতামটা খুঁজে পাচ্ছি নে। নির্মলা । বোধ হয় ঐখানেই কোথাও আছে। চন্দ্ৰবাবু। (নিশ্চিন্তভাবে) একবার খুঁজে দেখো তো ফেনি । নির্মলা । তুমি কোথায় কী ফেল আমি কি খুঁজে বের করতে পারি। চন্দ্রবাবু। (মনে একটুখানি সন্দেহের সঞ্চার হওয়ায়, মিশ্বকণ্ঠে) তুমিই তো পার নির্মল। আমার সমস্ত ঐটি সম্বন্ধে এত ধৈৰ্য আর কার আছে ?
