পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VO 8 রবীন্দ্র-রচনাবলী অনন্তের মধ্যে এই-যে বিরহবেদনা সমস্ত বিশ্বকাব্যকে রচনা করে তুলছে, কবি জ্ঞানদাস তার ভগবানকে বলছেন, এই বেদনা তোমাতে আমাতে ভাগ করে ভোগ করব ; এ বেদনা যেমন তোমার তেমনি আমার । তাই কবি বলছেন ; আমি যে দুঃখ পাচ্ছি। তাতে তুমি লজ্জা কোরো না প্ৰভু !-- প্রেমের পত্নী তোমার আমি, আমার কাছে লাজ কী স্বামী ! তোমার সকল ব্যথার ব্যাখী আমায় করে নিশিদিন । নিদ্রা নাহি চক্ষ তব, আমিই কেন ঘুমিয়ে রব ! বিশ্ব তোমার বিরাট গেহ, एङठशि७ दिक्षं बैनीन् । ভোগের সুখ তো আমি চাই নে— যারা দাসী তাদের সেই সুখের বেতন দিয়ে । আমি যে তোমার পত্নী ; আমি তোমার বিশ্বের সমস্ত দুঃখের ভার তোমার সঙ্গে বহন করব । সেই দুঃখের ভিতর দিয়েই সেই দুঃখকে উত্তীর্ণ হব ! আমার মধ্যে তোমার প্রকাশ অখণ্ড মিলনে সম্পূর্ণ হবে। সেইজন্যেই, আমি বলছি নে আমাকে সুখ দাও, আমি বলছি ; আবিরাবীর্ম এধি। হে প্ৰকাশ, আমার মধ্যে তুমি প্রকাশিত হও — আমি তোমার ধর্মপত্নী, ভোগের দাসী নহি । নিষ্কপটে কহিআমায়, প্ৰভু, দেখাইয়ো না সুখের প্রলোভন । তোমার সাথে দুঃখ বহি সেই তো পরম ধন । ভোগের দাসী তোমার নাহি তাই তো ভুলও নাকো, মিথ্যা সুখে মিথ্যা মানে দূরে ফেলাও নাকে । পতিব্ৰতা সতী আমি, তাই তো তোমার ঘরে হে ভিখারি, সব দারিদ্র্য उठाघक्र (क्रद दF6 । সুখের ভূত্য নই। তব, তাই পাই না। সুখের দানআমি তোমার প্রেমের পত্নী এই তো আমার মান । মানুষ যখন প্রকাশের সম্পূর্ণতাকে চাবার জন্যে সচেতন হয়ে জাগ্রত হয়ে ওঠে তখন সে সুখকে সুখই বলে না। তখন সে বলে : যো বৈ ভূমা তৎসুখং । যা ভূমা তাই সুখ। আপনার মধ্যে যখন সে ভূমাকে চায় তখন আর আরামকে চাইলে চলবে না, স্বার্থকে চাইলে চলবে না, তখন আর কোণে লুকোবার জো নেই, তখন কেবল আপনার হৃদয়োচ্ছাস নিয়ে আপনার আঙিনায় কেঁদে লুটিয়ে বেড়াবার দিন আর থাকে না । তখন নিজের চোখের জল মুছে ফেলে বিশ্বের দুঃখের ভার কাধে তুলে নেবার জন্যে প্ৰস্তুত হতে হবে।