kr রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী মুরতি যে শক্তির নিত্যলীলা নানা বৰ্ণে আঁকা, যে গুণী প্ৰজাপতির পাখা যুগ যুগ ধ্যান করি একদা কী খনে রচিল অপূর্ব চিত্রে বিচিত্র লিখনে এই নারী রচনা তাহারি । এ শুধু কালের খেলা এর দেহ কী আলস্যে বিধাতা একেলা রাচিলেন সন্ধ্যাকালে আপনার অর্থহীন ক্ষণিক খেয়ালে যে-লগানে কর্মহীন ব্লকান্তক্ষণে মেঘের মহিমামায়া মুহুর্তেই মুগ্ধ করি আঁখি অন্ধরাত্রে বিনা ক্ষোভে যায় মুখ ঢাকি । শরতে নদীর জলে যে-ভঙ্গিমা, বৈশাখে দাড়িম্ববনে যে-রাগারঙ্গিমা GISCFS TCP অবজ্ঞাকটাক্ষ হানে মধ্যাহের তাপে, শ্রাবণের বন্যাতিলে হারা ভেসে-যাওয়া শৈবালের যে নৃত্যের ধারা, মাঘশেষে অশ্বশ্বের কচি পাতাগুলি যে চাঞ্চল্যে উঠে দুলি, হেমন্তের প্রভাত বাতাসে শিশিরে যে বিলিমিলি ঘাসে ঘাসে, প্ৰথম আষাঢ়দিনে গুরু গুরু করবে: ময়ূরের পুচ্ছপুঞ্জ উল্লসিয়া উঠে যে গৌরবে: লতা যেন নারী হয়ে দিল চক্ষু ভরি । রঙিন বুদবুদ সে কি, ইন্দ্ৰধনু বুঝি, অন্তর না পাই খুঁজি চিত্ত অগভীর । কারো পথ চেয়ে নাহি থাকে, কারে—না-পাওয়ার দুঃখ মনে নাহি রাখে । মুগ্ধ প্ৰাণ-উপহার অনায়াসে নেয়, আর অনায়াসে ভোলে দায় তার । ভুবনে যেখানে যত নয়নের আনন্দলহরী তাই দেখা দিতে এল নারীমূর্তি ধরি ।
