পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ミb" রবীন্দ্র-রচনাবলী নটরাজ। সে ভার আমার উপর । ইশারায় বুঝিয়ে দেব। 體 রাজা । আমার কাছে ইশারা চলবে না। বিদ্যুতের ইশারার চেয়ে বঞ্জের বাণী স্পষ্ট, তাতে ভূল বোঝার আশঙ্কা নেই। আমি স্পষ্ট কথা চাই। পালাটা আরম্ভ হবে কী দিয়ে ? r নটরাজ। বর্ষাকে আহবান ক’রে । রাজা । বর্ষাকে আহবান ? এই আশ্বিন মাসে ? রাজকবি । ঋতু-উংসবের শবসাধনা ? কবিশেখর ভূতকালকে খাড়া ক’রে তুলবেন । অদ্ভুত রসের কীর্তন। নটরাজ। কবি বলেন, বর্ষাকে না জানলে শরৎকে চেনা যায় না। আগে আবরণ তার পরে আলো । রাজা । ( পারিষদের প্রতি ) মানে কী হে ? পারিষদ। মহারাজ, আমি ওঁদের দেশের পরিচয় জানি । ওঁদের হেঁয়ালি বরঞ্চ বোঝা যায় কিন্তু যখন ব্যাখ্যা করতে বসেন তখন একেবারেই হাল ছেড়ে দিতে হয় । রাজকবি। যেন দ্ৰৌপদীর বস্ত্রহরণ, টানলে আরও বাড়তে থাকে। নটরাজ । বোঝবার কঠিন চেষ্টা করবেন না মহারাজ, তাহলেই সহজে বুঝবেন। জুই ফুলকে ছিড়ে দেখলে বোঝা যায় না, চেয়ে দেখলে বোঝা যায়। আদেশ করুন এখন বর্ষাকে ডাকি । রাজা । রসো রসে । বর্ষাকে ডাকা কী রকম ? বর্ষ তো নিজেই ডাক দিয়ে আসে । নটরাজ। সে তো আসে বাইরের আকাশে । অন্তরের মাকাশে তাকে গান গেয়ে ডেকে আনতে হয় । রাজা । গানের মুরগুলো কি কবিশেখরের নিজেরই বাধা ? নটরাজ। ই মহারাজ । রাজা । এই আর এক বিপদ । রাজকবি । নিজের অধিকারে পেয়ে কাব্যরসের হাতে কবি রাগিণীর দুৰ্গতি ঘটাবেন। এখন রাজার কর্তব্য গীতসরস্বতীকে কাব্যপীড়ার হাত থেকে রক্ষা করা । মহারাজ, ভোজপুরের গন্ধৰ্বদলকে খবর দিন না। দুই পক্ষের লড়াই বাধুক তা হলে কবির পক্ষে “শেষ বর্ষণ” নামটা সার্থক হবে । নটরাজ। রাগিণী যতদিন কুমারী ততদিন তিনি স্বতন্ত্র, কাব্যরসের সঙ্গে পরিণয় ঘটলেই তখন ভাবের রসকেই পতিব্ৰত মেনে চলে। উলটে, রাগিণীর হকুমে ভাব যদি