পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

/ শেষ বর্ষণ లిలి রাজকবি। তাই না হয় হল কিন্তু অশ্রুবাম্পের কুয়াশ ঘনিয়ে দিয়ে সেই পদ্মটিকে একেবারে লুকিয়ে ফেললে তো চলবে না । নটরাজ । মিলনের আয়োজনও আছে। খুব বড়ো মিলন, অবনীর সঙ্গে গগনের . নাট্যাচার্ধ একবার শুনিয়ে দাও তো । ধরণীর গগনের মিলনের ছন্দে বাদল বাতাস মাতে মালতীর গন্ধে । উৎসবসভা মাঝে শ্রাবণের বীণা বাজে, শিহরে তামল মাটি প্রাণের আনন্দে । দুই কূল আকুলিয়া অধীর বিভঙ্গে নাচন উঠিল জেগে নদীর তরঙ্গে । কঁাপিছে বনের হিয়া বরষনে মুখরিয়া, বিজলি ঝলিয়া উঠে নবঘন মন্দ্রে । রাজা । আঃ, এতক্ষণে একটু উৎসাহ লাগল। থামলে চলবে না। দেখো না, তোমাদের মাদলওআলার হাত দুটো অস্থির হয়েছে, ওকে একটু কাজ দাও । নটরাজ । বলি ও ওস্তাদ, ওই যে দলে দলে মেঘ এসে জুটল, ওরা যে খ্যাপার মতো চলেছে। ওদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলে না, একেবারে মৃদঙ্গ বাজিয়ে বুক ফুলিয়ে । যাত্রা জমে উঠুক না মুরে কথায় মেঘে বিদ্যুতে ঝড়ে । পথিক মেঘের দল জোটে ঐ শ্রাবণ-গগন-অঙ্গনে । মন রে আমার, উধাও হয়ে নিরুদ্দেশের সঙ্গ নে । দিক-হারানো দুঃসাহসে সকল বাধন পডুক খসে, কিসের বাধা ঘরের কোণের শাসন-সীমা লঙ্ঘনে । বেদন তোর বিজুলশিখা জলুক অস্তরে ; সর্বনাশের করিস সাধন বজ্ৰ-মন্তরে । অজানাতে করবি গাহন, ঝড় সে পথের হবে বাহন, শেষ করে দিস আপনারে তুই প্রলয়রাতের ক্রদনে।